উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনেএসেছেন মিয়ানমারের উচ্চপর্যায়ের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উখিয়ার এক্সটেনশন ক্যাম্প-৪ এ পৌঁছেছে।

এর আগে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল এইদিন সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে প্রতিনিধিদলটি ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপে যান।

একইসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের দূযোর্গ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আহা সেন্টারের একটি প্রতিনিধিদলও রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করবে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম গনমাধ্যমকে জানান , দুপুর ১টার দিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল উখিয়ার ক্যাম্প এক্সটেনশন-৪ এ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবে। বিকেলে আহা সেন্টারের প্রতিনিধিদলটি রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করবে এবং সন্ধ্যায় রয়েল টিউলিপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

পরদিন রোববার (২৮ জুলাই) সকালে আবারও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে প্রতিনিধিদলের। এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমার প্রতিনিধিদল শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তার সঙ্গে মিটিং করে রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবে।

দু’দিনের সফরে আহা সেন্টার ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরাতে আলোচনার মাধ্যমে বোঝাবে। মিয়ানমার সরকার তাদের জন্য যেসব কাজ করছে, সেগুলো তুলে ধরবে ও শরণার্থীদের সর্বশেষ পরিস্থিত ঘুরে দেখবে বলেও যোগ করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।কক্সবাজার বিমানবন্দরে ত্যাগ করছে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল।
২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর রাখাইন রাজ্যে চলা হত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাচঁতে এই পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ পাহাড়ে ৩৪টি শরণার্থী ক্যাম্পে। এসব রোহিঙ্গাদের ফেরাতে শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে এর আগে দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। সব ধরনের প্রস্তুতির পরও মিয়ানমার রহস্যজনক কারণে চুক্তি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি। পরে জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় সবদেশেই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করলেও চীনের রহস্যজনক ভূমিকায় সমস্যা আলোর মুখ দেখেনি। তবে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে দেখে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয়বারের মতো মিয়ানমার এই প্রতিনিধি দলের আগমন বলে ধারণ করছে কূটনীতিক মহল।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ পাহাড়ের ৩৪টি শরণার্থী শিবিরে এসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে এর আগে দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। তবে মিয়ানমার চুক্তি বাস্তবায়নে আগ্রহ দেখায়নি।