পাবনার সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি)-এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজাউদ্দৌলাকে গভীর রাতে এক ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে পুলিশে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তাদেরকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ।
আজ শুক্রবার দুপুরে ওই কলেজে প্রশিক্ষণরত সিরাজগঞ্জের অনাবাসিক এক ছাত্রী বাদী হয়ে এই মামলা করেন। ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ ওই অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক মামলা দায়ের ও গ্রেফতারে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ খবরে শহরের সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ওসি ওবাইদুল হক জানান,টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজাউদ্দৌলা এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি করলে কলেজের আবাসিক সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

ওই কলেজের শিক্ষার্থী ও একাধিক প্রত্যক্ষ্যদর্শী জানান, গত দুই বছর ধরে বিএড উন্মুক্ত কোর্সের এক ছাত্রী সিরাজগঞ্জ থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার এসে দুই দিন কলেজের ছাত্রী হোস্টেলে অবস্থান করতেন। মাঝে মধ্যে তিনি অধ্যক্ষের কক্ষে রাতে থাকতেন। বিষয়টি নিয়ে আবাসিক শিক্ষার্থীরা চরম বিব্রত ও ক্ষুব্ধ ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে শিক্ষার্থীরা তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করেন।

ঘটনাটি জানাজানি হলে পাশের পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীরাও ওই কলেজ ক্যাম্পাসে এসে জড়ো হন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, টিটিসি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং এক ছাত্রীকে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাই। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখে রাত ১টার দিকে পুলিশে খবর দিয়ে অভিযুক্তদের আমরা পুলিশের হাতে তুলে দেই। তবে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কলেজ ক্যাম্পাসে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন বলে আমরাও শুনেছি।

এ বিষয়ে পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান বলেন, অভিযুক্তদের পাবনা সদর থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিকেল ৫টার দিকে ওসি ওবাইদুল হক গনমাধ্যমকে বলেন, ধর্ষণচেষ্টা ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে কলেজে প্রশিক্ষণরত সিরাজগঞ্জের অনাবাসিক এক ছাত্রী বাদী হয়ে টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজাউদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পুলিশ মামলাটি গ্রহণ করে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

এদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজাউদ্দৌলার বিরুদ্ধে আজ দিনভর বিক্ষোভ করেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, গত রাতের ঘটনা হলেও বিপুল টাকার বিনিময়ে পুলিশ বিষয়টি ধাপাচাপা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বিক্ষোভের মুখে তা পারেনি। তবে যে মামলা দিয়েছে তাও দায়সারা গোছের। এদিকে সুজাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন অনেকে।