বরিশালে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত বরগুনার রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় প্রতিনিধিসভা শুরু হয়।

দলের বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্র সভাপতিত্বে এ সভা হয়। শুরুতেই আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বক্তৃতার বেশিরভাগই ছিল নয়ন বন্ডকে ঘিরে। এছাড়াও আরও দুজন শীর্ষ নেতা তাদের বক্তৃতায় নয়ন বন্ড প্রসঙ্গ টেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সভায় তোফায়েল আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরগুনার ঘটনাটি অবগত রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে আসছেন। নয়ন বন্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু প্রতিনিধিসভায় যোগ দিলেও কোনো বক্তব্য দেননি। তবে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর বক্তব্য দেন।

উল্লেখ্য, নয়ন বন্ডের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। শুরু থেকেই সুনাম দেবনাথ সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা তাঁর বাবার সুনাম ক্ষুণ্ন করতেই মিথ্যা বলছেন।

জাহাঙ্গীর কবীরের বক্তব্যের পর সেখানে থাকা সংবাদকর্মীদের বাইরে যেতে অনুরোধ করা হয়। সংবাদকর্মীরা বের হয়ে যাওয়ার পর দলীয় অন্য নেতারা বক্তব্য দেন। তাঁদের বক্তব্যের পর অতিথিরা বক্তব্য দেন। প্রতিনিধি সভায় অংশ নেওয়া অন্তত চারজন জনপ্রতিনিধি নয়ন বন্ডকে নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্য দেওয়ার বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বরগুনার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেই দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দলের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, বরগুনার ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি যারা ক্ষুণ্ন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ফোরামে (ওয়ার্কিং কমিটি) সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজ মল্লিক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য গোলাম রব্বানী চিনু ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ্।