প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ব্যাংকে তারল্য সংকট নেই। ব্যাংকে টাকা আছে তবে লুটে খাওয়ার মতো টাকা নেই।’

আজ সোমবার সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্পূরক বাজেটের আলোচনায় অংশ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ব্যাংকে টাকা নেই। আমি বলছি টাকা থাকবে না কেন, টাকা আছে তবে লুটে খাওয়োর মতো টাকা নেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বলেই উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বে অনেক দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা চলতে পারছি।। সারা বিশ্ব আজ অবাক হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিষ্ময়।

তিনি বলেন, প্রতি বাজেটেই সরকারের উন্নয়নের অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি, জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্খার প্রতিফলন ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায় ও ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়। এই প্রাক্কলন সংঙ্গত কারণেই একটু বেশি করা হয়। রাজস্ব হার প্রাক্কলনে অনেকটা উচ্চাভিলাসী হওয়ার প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। এটা সমৃদ্ধি আগামীর পথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রেরণা যোগায়। গত এক দশকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অসম্ভবকে সম্ভব করার গল্প। কোন মানুষের যদি উচ্চাভিলাস না থাকে, সে কিছু অর্জন করতে পারে না। বিগত বছরগুলোকে বাজেট বাস্তবায়নের পরিসংখ্যান এই কথাই প্রমাণ করে, আমাদের লক্ষ্যসমূহ সব সময়ই বাস্তবভিত্তিক ছিল। যা পরবর্তীতে বাজেট আলোচনায় বিস্তারিত বলার সুযোগ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাস্তবতার কারণেই বাজেটের কিছুটা সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন হয় এবং প্রতিবছরই আমরা এটা করে থাকি। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে যেসব সামষ্টিক অর্থনৈতিক অনুমানসমূহের ওপর ভিত্তি করে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল, পরবর্তীতে দেশীয় ও বৈশ্বিক নানা ঘটনার কারণে সেসব সামষ্টিক অর্থনৈতিক অনুমানসমূহের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেট প্রণয়নকালে আমাদের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচনাগুলোর মধ্যে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ অনুমান করা হয়েছিল। সংশোধিত বাজেটে তা ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ হবে বলে অনুমান করছি। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, যা আমরা সাফল্যজনকভাবে অতিক্রম করতে পারবো বলে আশা করছি। অপরদিকে মূল্যস্ফিতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ অনুমান করা হলেও সংশোধিত মূল্যস্ফিতি ধার্য্য করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং প্রাক্কলিত জিডিপি ২৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮শ’ কোটি টাকার পরিবর্তে কিছুটা হ্রাস করে ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধি যখন বৃদ্ধি পায় তখন মূল্যস্ফিতিও বৃদ্ধি পাওয়ার কথা, যেহেতু আমরা বাজেট পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে অত্যন্ত সতর্ক তাই সবসময় মূল্যস্ফিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, মূল বাজেটে রাজস্ব বাবদ প্রাক্কলিত ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা থেকে ২২ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা কমিয়ে সংশোধিত বাজেটে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এরমধ্যে এনবিআর রাজস্ব বাবদ প্রাক্কলিত ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা থেকে ১৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা কমিয়ে সংশোধিত বাজেটে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা ননএনবিআর রাজস্ব বাবদ মূল বাজেটে প্রাক্কলিত ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা থেকে সংশোর্ধিত বাজেটে ১২৭ কোটি টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব বাবদ মূল বাজেটে প্রাক্কলিত ৩৩ হাজার ২৫২ কোটি থেকে ৬ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা কমিয়ে সংশোধিত বাজেটে ২৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। বাসস