অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ মার্চ ১৭, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 537 বার
মাত্র ৩০ হাজার টাকায় নিজের ১৩ বছর বয়সী মেয়েকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রি করছিলো পাষণ্ড পিতা। এ সময় গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ আটক করেছে তাকে। পাষণ্ড ওই পিতার নাম এরশাদ আলী (৩৫)। এ সময় শিল্লী (৩৫) নামের এক যৌনকর্মীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিল্পীর কাছে নিজের মেয়েকে বিক্রি করছিলো এরশাদ আলী। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে।
গ্রেফতার হওয়া পাষণ্ড পিতা এরশাদ আলী নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আজগর সোনার ছেলে ও শিল্পী নীলফমারী জেলার ডোমার উপজেলার পাংগা চৌপটি গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে। এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই ওলিয়ার রহমান বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত দুই আসামির বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
বিক্রির হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কিশোরী জানায়, তার বাবা মায়ের অনেক আগেই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। বাবা ও মা দুজনই আবার বিয়ে করে নতুন সংসার করছে। সে কখনো দাদির কাছে, কখনো ফুপুর কাছে আবার কখনো মায়ের কাছে থাকতো। এ পরিস্থিতিতে তার বাবা তাকে বলে, ‘তোমার খাওয়ার খরচ দিয়ে আমি তোমাকে ঢাকায় ভালো একটি জায়গায় রেখে দিব, সেখানে তুমি ভালো থাকবে।’ বাবার কথায় রাজি হয়ে গত শনিবার সে বাবার সঙ্গে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু তার বাবা তাকে ঢাকা না নিয়ে সরাসরি দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে।
এ সময় সে তার বাবার বিচার চায় কিনা জানতে চাইলে কিশোরী কান্না করতে করতে বলে, ‘আব্বু ভূল করে ফেলেছে। আব্বুকে ভালো হওয়ার জন্য একবার সুযোগ দেন স্যার।’ এ সময় এক নরপশু পিতার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা দেখে উপস্থিত সকলের মধ্যে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সে কোথায় যেতে চায় জানতে চাইলে সে জানায়, ‘আমি আমার মার কাছে যেতে চাই।’
গ্রেফতার হওয়া এরশাদ আলী ও যৌনকর্মী শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া কিশোরীর বাবা এরশাদ আলীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যাতায়াতের সূত্র ধরে যৌনকর্মী শিল্পীর সঙ্গে পরিচয়। এরশাদ আলী শিল্পীকে প্রস্তাব দেয় একটি মেয়ে এনে দিলে তাকে ৮০ হাজার টাকা দিতে হবে। কিন্তু শিল্পী তাকে ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। এই ৩০ হাজার টাকার জন্যই এরশাদ আলী তার মেয়েকে যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. এজাজ শফী জানান, প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে থানা পুলিশের একটি দল শনিবার দিনগত রাতে ছদ্মবেশে যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। এ সময় হাতেনাতে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হওয়া কিশোরীর নির্ভরযোগ্য কোন অভিভাবক না থাকায় আদালতের মাধ্যেমে ১৮ বছর না হওয়ার পর্যন্ত সরকারি সেফ হোমে রাখার আবেদন করা হবে।
সূত্র-ইত্তেফাক
Leave a Reply