জ্যোতিষশাস্ত্র কয়েক হাজার বছরের পুরনো শাস্ত্র। তন্ত্রও তাই। তবে জ্যোতিষ হল শাস্ত্র আর তন্ত্র হল সাধনা। জ্যোতিষ হল বেদের চক্ষু এবং ঈশ্বরের আলো। যে আলো মানুষকে পথ দেখায়, তার কর্তব্য-অকর্তব্য সম্বন্ধে সঠিক দিশা নির্দেশ করে। তন্ত্র তনুকে ত্রাণ করে। এই ‘তনু’ অর্থে দেহ। তবে শুধুমাত্র আমাদের স্থূল দেহ নয়, আমাদের মন ও সূক্ষ্ম শরীরকেও পরিত্রাণ করে তন্ত্র। সহজ ভাবে বলতে গেলে তন্ত্র হল ঈশ্বরের সাধন। কিন্তু মানুষের বিপদ-আপদে মুখ ফিরিয়ে থাকে না। তন্ত্রের প্রয়োগ অবাস্তবকে বাস্তব করার জন্য নয়, বরং বাস্তব সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান করার জন্য প্রযুক্ত হয়।

জ্যোতিষশাস্ত্র মানুষকে পথ নির্দেশ করতে পারে, কিন্তু গ্রহ-নক্ষত্রজনিত সমস্যার সমাধান করতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ বলি, ভৌমদোষ কাকে বলে, ভৌমদোষ রাশিচক্রে কতটা প্রভাব ফেলবে সেটা বলবে জ্যোতিষ, আর এই ভৌমদোষকে প্রশমিত করতে হবে তন্ত্রের সাহায্যে, রক্তপ্রবালের সাহায্যে নয়। যে কোনও অশুভ গ্রহযোগ খণ্ডন বা প্রশমিত করতে হবে তন্ত্রের মাধ্যমে, গ্রহরত্নের সাহায্যে নয়। শুধুমাত্র গ্রহদোষ নয়, এমন কিছু সমস্যা মানুষের জীবনে আসে, যেগুলি কোনও যুক্তিগ্রাহ্য বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তন্ত্রই পারে মুক্তির পথ দেখাতে।