বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যৌতুকলোভী স্বামীর বিরুদ্ধে রেহানা আকতার সুমাইয়া খাতুন (১৮)নামের এক নববধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে স্বামীর ঘর থেকে নববধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত রেহানা আকতার শেরপুর উপজেলার ঘোলাবাড়ি ঘটুবটতলা এলাকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রেহানা আকতার সুমাইয়া সঙ্গে প্রায় ৭ মাস আগে ধুনট উপজেলার কৈয়াগাড়ি গ্রামের সাইদুর রহমান শামীমের ছেলে ব্যবসায়ী হৃদয় হাসানের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুকের কোন শর্ত না থাকলেও হৃদয় হাসানের চাপের মুখে মেয়ের বাবা ১টি মোটরসাইকেল, টেলিভিশন ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল দিতে বাধ্য হয়েছে।

এরপরও ব্যবসার অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে হৃদয় হাসান ২০দিন আগে স্ত্রীর নিকট এক লাখ টাকা দাবি করে। কিন্ত এই টাকা দিতে অস্বীকার করায় স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে কয়েকদিন আগে সমঝোতার বৈঠক করে কোন সমাধান হয়নি।

এ অবস্থায় রবিবার বিকেলে স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে হৃদয় হাসান। এরপর এ হত্যাকাণ্ডটি আত্মহত্যা বলে চালানোর কৌশল হিসেবে স্ত্রীর মৃতদেহ ঘরের ধর্ণার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে হৃদয় হাসান পালিয়ে যায়। প্রতিবেশী লোকজনের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ রবিবার রাত ১০টার দিকে রেহানা আকতার সুমাইয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়।

নববধুর বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যৌতুকের এক লাখ টাকা না পেয়ে হৃদয় হাসান আমার মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মৃতদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে। মেয়ের ময়না তদন্ত ও দাফন কাজ শেষ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।’

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা (ইউডি) রেকর্ড করে ময়না তদন্তের জন্য রেহানা আকতার সুমাইয়ার মৃতদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া মৃত্যুর কারণ জানা সম্ভব না। তবে এ ঘটনায় মেয়ে পক্ষের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’