‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও ভাষা শহীদদের স্মরণে লাখো প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করলো নড়াইলবাসী।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ খেলার মাঠে এক লাখ মোমবাতি জ্বালিয়ে এ ব্যতিক্রম আয়োজনের মধ্যদিয়ে ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করা হয়েছে।

সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ২১’র সন্ধ্যায় শুরু হয় লাখো মঙ্গল প্রদীপ তথা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন।

মোমবাতির আলোতে আলোকিত হয়ে উঠে বিশালাকৃতির এ মাঠ। মোমবাতির আলোর মাধ্যমে শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়।

একই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৬৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ৬৮টি ফানুষ উড়িয়ে দেন।

সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এ গান পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ভাষা সৈনিক রিজিয়া খানম।

এ সময় নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নড়াইল পৌরসভার মেয়র মো. জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, নড়াইল একুশের আলোর সদস্য সচিব ও নাট্য ব্যক্তিত্ব কচি খন্দকারসহ নড়াইলের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

নড়াইল একুশের আলোর সভাপতি প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা মুক্ত সুখী-সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধারণ করে প্রতি বছর আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানের। এ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর মুক্তির আলোয় ভরে উঠুক এ কামনা আমাদের।’

প্রতি বছরের মতো এবারও নড়াইলবাসী, ঢাকাসহ নড়াইলের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী এ মনোরম দৃশ্য উপভোগ করেন।

প্রসঙ্গত, নড়াইলে একুশ উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে ১৯৯৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে এভাবেই ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হচ্ছে।