চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (জেলার) সোহেল রানা বিশ্বাসকে ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার নগদ টাকা, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক, ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআরের নথি ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটক জেলার মাসুদ রানা বিশ্বাস ময়মনসিংহ শহরের ১১৯, আর কে মিশন রোডের বাসিন্দা।

 

রেলওয়ে পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতেওই ট্রেনের একটি বগিতে তল্লাশী চালিয়ে তাকে একটি ব্যাগসহ আটক করা হয়। পরে থানায় নিয়ে তার ব্যাগ তল্লাশী করা হয়। তাকে ট্রেন থেকে ব্যাগসহ আটক করে রেলওয়ে থানায় নেয়ার পর তার পরিচয় মিলে। সে নিজেই জানায় তার পরিচয়। বিপুল পরিমাণ এই টাকা, এফডিআর, চেক ও মাদকের ব্যাপার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

পুলিশ ধারণা করছে, জেলার হিসেবে অবৈধভাবে সে এসব টাকা রোজগার করেছেন। এব্যাপারে ভৈরব রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে বলে জানায় পুলিশ।

সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ যাওয়ার উদ্দেশে সকাল ৭টায় বিপুল পরিমাণ টাকা, এফডিআর, চেক ও ফেনসিডিল একটি ব্যাগে ভরে সে একাই চট্রগ্রামে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে। ট্রেনটি ভৈরব রেলস্টেশনে বিরতি দিলে রেলওয়ে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বগিতে তল্লাশি চালিয়ে ব্যাগসহ তাকে আটক করেন। বিভিন্ন ব্যাংকের এফডিআরগুলো তার নিজের নামে ১ কোটি টাকা, তার স্ত্রী হোসনে আরার নামে ১ কোটি টাকা ও শ্যালক রাকিবুল হাসানের নামে ৫০ লাখ টাকা। ২৮ অক্টোবরের তারিখে তিনটি চেকে তার নামের চেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ও নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা পাওয়া যায়। তার ব্যাগে ১২ বোতল ফেনসিডিলও ছিল।

পুলিশ জানায়, তাকে আটকের পর গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে টাকা, এফডিআর, চেকের কোনো উৎসের কথা সে বলতে পারেনি। কিভাবে, কোথা থেকে এগুলো পেল তার কোনো উত্তরও দিতে পারেনি তিনি।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি আবদুল মজিদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ওই ট্রেনের বগিতে তল্লাশি চালিয়ে তাকে টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি টাকা, এফডিআর, চেকের কোন তথ্য দিতে পারেনি।

তিনি বলেন, আমরা ধারনা করছি এসব অবৈধ পথে রোজগার করা টাকা নিয়ে তিনি তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।

এদিকে কারা অধিদফতরের উপ-মহাপরিদর্শক (চট্টগ্রাম বিভাগ) পার্থ গোপাল বণিক জানিয়েছেন, সোহেল রানাকে আটকের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তিনি (সোহেল রানা) অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।