দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। ওয়াহিদা খানমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ইউএনওর বাসভবনে ঢুকে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রংপুর কমিউনিটি হাসপাতাল এবং তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ইউএনওর মাথার বাম দিকে বেশি আঘাত লেগেছে। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ধাতব কোনো বস্তু দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়েছে। তার শরীরের ডান দিক অবশ হয়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ওয়াহিদার বাবা নওগাঁ জেলার বাসিন্দা। মাঝে মাঝে মেয়ের বাসায় বেড়াতে আসেন এই মুক্তিযোদ্ধা। ইউএনও ওয়াহিদার স্বামী রংপুরের পীরগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।

জানা গেছে, ইউএনও’র বাবা ওমর আলী প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হন। কিন্তু আজ সকালে তিনি বাড়ি থেকে হাঁটার জন্য বের না হওয়ায় তার হাঁটার সঙ্গীরা খোঁজ নিতে বাসায় আসেন। পরে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন তারা। পুলিশ গিয়ে ইউএনও ও তার বাবাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে। ঘটনার সময় বাসভবনের নিরাপত্তাকর্মীকে একটি কক্ষে বেঁধে রাখা হয়েছিল বলে জানায় পুলিশ।

তবে কারা এই ঘটনাটি ঘটিয়ে, কেন ঘটিয়েছে এই বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছে না। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করা হচ্ছে।

দিনাজপুর-৬ আসনের জাতীয় সংসদ শিবলী সাদিক, দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম ও পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম জানান, গতরাত ৩টার দিকে ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে এক যুবক প্রবেশ করে। প্রথমে ওই যুবক তার বাবাকে আহত করে পাশের ঘরে আটকে রাখে। পরে ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলা চালায়। এলোপাতাড়িভাবে তাকেও কুপিয়ে পালিয়ে যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা জেলা প্রশাসকের।