প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের মানুষই অসহায় হয়ে পড়েছে। ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বা অফ্রিকার মতো স্বল্পোন্নত দেশ। সারা পৃথিবীর মানুষই এই মহামারিতে আক্রান্ত, আর না হয় আতঙ্কিত। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত প্রায় পাঁচ মাসে ভাইরাসটির কারণে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের। আক্রান্ত হয়েছে এক কোটির বেশি।

এই কারনে কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। এর মধ্যে অক্সফোর্ডের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন সবচেয়ে এগিয়ে আছে বলে দাবি করা হয়েছিল।

এমন পরিস্থিতিতে এবার বাংলাদেশেও প্রথম করোনার টিকা (ভ্যাকসিন) আবিষ্কারের দাবি করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। বুধবার (০১ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, তারা পশুর শরীরে এই ভ্যাকসিনের সফল প্রয়োগও করেছেন। মানবদেহেও এর সফলতা পাওয়া সম্ভব বলে আশা করছেন তারা।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ দেশের গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে দাবি করেন,‘আসলে আমরা কাজ শুরু করার পর প্রাথমিকভাবে এটা নিয়ে সফল হয়েছি। এনিমেল মডেলে এটা সফল হয়েছে। এখন আমরা আশা করি মানবদেহেও এটা সফলভাবে কাজ করবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কাছে যাব। এরপর তাদের দেয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করবো৷’

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের বিষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড একটি বিবৃতিও দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজ অনুযায়ী মঙ্গলবার (৩০ জুন) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৫ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। উক্ত সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করে। যা যৌক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে বলে আশা করছেন তারা।

প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, উক্ত টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দিয়েছেন যা ইতোমধ্যেই এনসিবিআই কর্তৃক স্বীকৃত ও প্রকাশিত হয়েছে।

টিকা আবিষ্কারের বিষয়ে আরো বলা হয়, গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণাগারে আবিষ্কৃত টিকাটির বিশদ বিশ্লেষণের পর ল্যাবরেটরি এনিমেল মডেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে যথাযথ এন্টিবডি তৈরিতে সন্তোষজনক ফলাফল পাওয়া গেছে বলেও দাবি করছেন তারা।

বিষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এই টিকাটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিরীক্ষার লক্ষ্যে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই সুরক্ষা ও কার্যকারিতা পরীক্ষায় সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।’

টিকা আবিষ্কার নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড।