জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আর নেই। ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আজ বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ছেলে আনন্দ জামান তার বাবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন গণমাধ্যমকে ।

এর আগে বিকেলে তার দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট থেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

আনন্দ জানান, হাসপাতালের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করে শুক্রবার সকালে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। জানাজা ও দাফনের ব্যাপারে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত ২৭ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় শনিবার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাকে। হার্টের সমস্যার পাশাপাশি ৮৩ বছরের এই অধ্যাপক কিডনি, ফুসফুস ও শ্বাসযন্ত্রের জটিলতায় ভুগছিলেন।

অসুস্থতার কারণে বরেণ্য এই শিক্ষাবিদ এপ্রিলের শুরুতে এক সপ্তাহের জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষক আনিসুজ্জামান, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো এবং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের কমনওয়েলথ অ্যাকাডেমিক স্টাফ ফেলো।

তিনি জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও ইউনিভার্সিটি অব প্যারিস, নর্থ ক্যারালাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ব ভারতীর ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন।

শিক্ষায় অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি। বাংলা শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মভূষণ পেয়েছেন।

১৯৩৭ সালে কলকাতায় জন্ম নেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পরিবারের সঙ্গে তিনি তৎকালীন পূর্ব বাংলায় চলে আসেন।

তিনি ১৯৯৩ ও ২০১৭ সালে দুইবার ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার আনন্দ পুরস্কার, ২০০৫ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট. ডিগ্রি এবং ২০১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিণী পদক লাভ করেন। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।