সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইলে দায়ের হওয়া মামলায় সকালে স্থায়ী জামিন দেয়ার পর বিকেলে ওই জামিন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী এপ্রিল মাসে এ বিষয়ে জারি করা রুলের উপর শুনানি করা হবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মবীনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্থায়ী জামিন দিয়ে বিকেলে তা প্রত্যাহার করে নেন।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে মন্তব্য করায় মানহানির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর নড়াইল সদর আমলি আদালতে মামলাটি করেন জেলার নড়াগাতী থানার চাপাইল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান রায়হান ফারুকী ইমাম। পরে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট এ মামলায় নড়াইলের আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর হয়। এরপর ওই মামলায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়া একই বছরের ৯ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সমাবেশে খালেদা জিয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বির্তক আছে বলে মন্তব্য করেন। এছাড়া একই সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে তাকে (বঙ্গবন্ধু) ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তিনি স্বাধীনতা চাননি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।’

তার এই বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করেন নড়াইলের জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ইমাম। পরে তিনি ২৪ ডিসেম্বর (২০১৫) খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইল সদর আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে নড়াইলের আদালতে ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে আরও একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন শহীদ শেখ জামাল জাতীয় স্মৃতি পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কালিয়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ আশিক বিল্লাহ।এছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে ওইদিনই (২৯ ডিসেম্বর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নামেও একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন তিনি।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডদেশ নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি খালেদা জিয়া। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল থেকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি তিনি।