রাজনীতি | তারিখঃ মার্চ ৮, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 2967 বার
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল ও হামলায় ছাত্রলীগ কর্মী রাকিব নিহতের ঘটনায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়িয়ে নিরপরাধ সাবেক শিবির-কর্মী নজরুল ইসলামকে হত্যার বিচার দাবী করে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
গণমাধ্যমে সংগঠনের সহকারী প্রচার সম্পাদক এ.আর মানিক প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল সালাহউদ্দিন আইউবী। তারা বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, কিছু গণমাধ্যমের দায়িত্বহীন অপপ্রচার ও পুলিশের সেবাদাসমূলক অমানবিক নৃশংসতার মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী নজরুল ইসলামকে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হামলার ঘটনার পরপরই কোন যাচাই বাছাই ছাড়াই আগ বাড়িয়ে যমুনা টেলিভিশন, সময় নিউজসহ কিছু গণমাধ্যমে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে ফলাও করে মনগড়া বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অথচ হামলার ঘটনায় ছাত্রশিবিরের কারো দূরতম সম্পর্ক ছিলনা। বরং এ হামলা ছিল স্থানীয় আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীন কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ। এ কোন্দলের ব্যাপারে স্থানীয় ১ নং আমানুল্লাহপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের যুবলীগ সভাপতি মো. সবুজ নিজেদের কোন্দলের বিষয়টি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও পোষ্ট করেছেন। এ ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, স্থানীয়ভাবে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, এ হামলার ঘটনা মূলত স্থানীয় ১ নং আমানুল্লাহপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ সভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক খোকন গ্রুপের কোন্দলের ফল। তাছাড়া হামলাকারীর এক বন্ধুও এ ঘটনার সাথে আওয়ামী রাজনৈতিক কোন্দলের বিষয়টি জড়িত বলে নিশ্চিত করে ভিডিও পোষ্ট করেছেন। এ হামলায় জড়িত হিসেবে মিথ্যা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে কথিত ক্রসফায়ার নাটকের মধ্য দিয়ে শিবিরের সাবেক কর্মী নজরুল ইসলামকে পুলিশ হত্যা করেছে। অথচ ১ মার্চ (ঘটনার দিন) নজরুল ইসলাম পূর্বের একটি মামলার আগাম জামিন নিতে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। মামলাটি হলো ঢাকা সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ১২ নং কোর্টের বিচারক আব্দুল হাফিজ ও বিচারক এজারুল হক আকন্দ সমন্নিত বেঞ্চের মামলা তালিকায় (নোয়াখালী ০৫১০৭৬৪/২০২০, Tender number: ১২৭৯১), সিরিয়াল-৬২২। (ওয়েবসাইটে সুপ্রিম কোর্টের শুনানী তালিকায় এ মামলার উল্লেখ রয়েছে এবং আমাদের নিকট তার স্ক্রীনশট সংরক্ষিত আছে।)
নজরুল ইসলাম বনাম রাষ্ট্র মামলাটি বিকেল ৩ টা ৫০ মিনিটে জামিনের শুনানী শুরু হয়। তিনি বিকাল ৫টার পর পর্যন্ত ঢাকার সুপ্রিম কোর্টেই ছিলেন। তাহলে সে একই দিনে রাত ৮ টায় নোয়াখালীর একটা ইউনিয়নে সংঘটিত সংঘর্ষে তিনি কীভাবে যুক্ত থাকতে পারেন? অথচ শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে আসল খুনিদের আড়াল করতে তাঁর বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে মিথ্যা বানোয়াট মামলা করা হয় এবং পুলিশ তাকে পরের দিন গ্রেপ্তার করে রাতে ‘ক্রস ফায়ারের’ নামে হত্যা করে। আর তাঁকে হত্যা করা হয়েছে নোয়াখালী সদরের এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি একরামুল করিম চৌধুরীর নির্দেশনায় এবং তার এ স্বীকারোক্তির ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এমপি একরামুল স্পষ্ট করে বলেছেন, তার শক্ত অবস্থানের কারণে নজরুল ইসলামকে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সার্বিকভাবে প্রমাণিত যে এ ঘটনার সাথে জামায়াত-শিবিরের দূরতম কোন সম্পর্ক ছিল না। বরং এ হত্যাকান্ডটি আওয়ামী নেতাদের নির্দেশনায়, যমুনা টেলিভিশন ও সময় টিভি’র মত কিছু গণমাধ্যমের ঘৃন্য অপপ্রচার এবং পুলিশের বর্বরতার যৌথ সমন্বয়ে করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে আওয়ামী নেতা, অপপ্রচারকারী গণমাধ্যম ও পুলিশ কেউ দায় এড়াতে পারে না। এমন নৃশংস বর্বরতা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা অবিলম্বে নিরপরাধ নজরুল ইসলামকে হত্যার জন্য নির্দেশদাতা, অপপ্রচারকারী ও ক্রস ফায়ারের নামে খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবী করছি। একই সাথে ছাত্রলীগ কর্মী রাকিবের প্রকৃত খুনিদেরও অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করছি। অন্যথায় খুনিদের আড়াল করার এই জঘন্য রাজনীতি বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেই প্রশস্ত করবে, যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।সূত্র-নয়া দিগন্ত।
Leave a Reply