দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি সময়ের আফগান যুদ্ধের অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ও তালেবান প্রতিনিধিদের মধ্যে এক ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ফলে আফগানিস্তানে ২০০১ সাল থেকে চলে আসা যুদ্ধের অবসান হতে যাচ্ছে।

আগামী ১৪ মাসের মধ্যে সব সৈন্য সরিয়ে নেবে যদি নতুন চুক্তি অনুযায়ী তালেবান প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।

শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং তালেবান নেতাদের উপস্থিতিতে এই চুক্তি সই হয়। খবর: বিবিসি

এর ফলে আফগানিস্তানে ১৮ বছর ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আফগান সরকার এবং তালেবানের সঙ্গে পরবর্তীতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং আফগান সরকারের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র-তালেবানের চুক্তি অনুযায়ী তালেবান যদি তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তাহলে আগামী ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে অবশিষ্ট সকল সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে যৌথবাহিনী।’

২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে আফগানিস্তান ভিত্তিক আল-কায়েদা গ্রুপ হামলার পর দেশটিতে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ২৪০০-র বেশি মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে। এখনো দেশটিতে প্রায় ১২ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। সংঘর্ষের অবসানের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২০১১ সাল থেকে আফগানিস্তানে শান্তি নিয়ে আলোচনা করতে আসা তালেবান নেতাদের আশ্রয় দিয়েছে কাতার। ২০১৩ সালে তালেবানের একটি কার্যালয় চালু করা হয়, তবে পতাকা নিয়ে বিরোধে সেই বছরই সেটা বন্ধ করে দেয়া হয়।

২০১৮ সালে জঙ্গি বাহিনীটি ঘোষণা করে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে বসবে যাতে শান্তির একটি রোডম্যাপ তৈরি করা যায়। কিন্তু চরমপন্থি এই বাহিনীটি আফগান সরকারের সঙ্গে কোন আলোচনায় বসতে অস্বীকার করে, যাদের তারা আমেরিকান পুতুল বলে বর্ণনা করে।

কাতারে নয় দফা আলাপ-আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ সপ্তাহের মধ্যে ৫৪০০ সেনা সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আলোচক।

কিন্তু কয়েকদিন পরে তালেবানের হামলায় একজন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর আলোচনাকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পর্দার আড়ালে উভয় পক্ষ আবার আলোচনা শুরু করে।

এক সপ্তাহ আগে সহিংসতা কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয় তালেবান-যদিও আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, এই সময়ের মধ্যেই তাদের হামলায় ২২ জন সৈনিক এবং ১৪ জন বেসামরিক বাসিন্দা নিহত হয়েছে।