সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ‘আবুধাবি সাসটেইনেবল উইক’, ‘জায়েদ সাসটেইনেবল অ্যাওয়ার্ড সেরিমনি’ ও অন্যান্য কর্মসূচিতে অংশ নিতে ৩ দিনের সরকারি সফরে রোববার রাতে আবুধাবি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহম্মদ ইমরান প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সুসজ্জিত মোটর শোভাযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে দুবাইয়ের শাংরি-লা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ইউএই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী এই হোটেলেই অবস্থান করবেন।

এরআগে, প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইন্সের বিমানটি ঢাকার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এসময় প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, কেবিনেট সচিব, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, কূটনৈতিক কোরের ডিন এবং উচ্চ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা সোমবার সকালে আবুধাবি ন্যাশনাল এক্সিবিশন সেন্টার (এডিএনইসি) এর আইসিসি হলে ‘আবুধাবি সাসটেইনেবল উইক’ এবং ‘জায়েদ সাসটেইনেবল অ্যাওয়ার্ডস সেরিমনি’তে যোগ দেবেন। পরে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী তার হোটেলে আয়োজিত এনভয়ে’স কনফারেন্সে যোগ দিবেন।

মঙ্গলবারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউএই প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম, আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহম্মদ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল-নাহিয়ান ও ইউএইর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম প্রেসিডেন্টের স্ত্রী শেখ ফাতিমা বিনতে মুবারক আল কেতবির সঙ্গে দেখা করবেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী এডিএনইসির হল-১১-তে আয়োজিত ‘দ্য ক্রিটিক্যাল রোল অব উইমেন ইন ডেলিভারিং ক্লাইমেট অ্যাকশন’ সংক্রান্ত সাক্ষাৎকার অধিবেশনে যোগ দিবেন।

ইউএই-তে তিন দিনের সরকারি সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে দেশে ফিরবেন।

এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে এসডিজি বাস্তবায়নে ঢাকার অবস্থান তুলে ধরবেন, সেখানে তিনি পশ্চিম এশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের বর্তমান মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে নির্দেশনা দেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফরের বিষয়ে রোববার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সফরকালে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চুক্তিগুলো হলো- ‘আমিরাত ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের সংশোধনী এবং ঢাকায় দূতাবাস নির্মাণে বারিধারা ডিপ্লোম্যাটিক এনক্ল্যাভে জমি বরাদ্দ সংক্রান্ত বাংলাদেশ সরকার ও আরব আমিরাত সরকারের মধ্যে চুক্তির সংশোধনী প্রটোকল সমঝোতা স্বাক্ষর।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই সফরের সময় রাষ্ট্রদূতের সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে বাহরাইন, ইরান, ইরাক, কুয়েত, লেবানন, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতগণ অংশ নেবেন। মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার ভূমিকা সম্পর্কে বাংলাদেশ দূতদের নির্দেশনা দেবেন। সূত্র : বাসস