গত বছর (২০১৯) সারাদেশে ৫,৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭,৮৫৫ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ হাজার ৩৩০ জন।

সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও গত এক বছরে রেলপথে ৪৮২টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত এবং নৌপথে ২০৩টি দুর্ঘটনায় ২১৯ জন নিহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা তেমন না বাড়লেও প্রাণহানী ৮.০৭ শতাংশ বেড়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪৪৭টি শিশু, ৬৯১ জন চালক, ৩৫৭ জন পরিবহন শ্রমিক ও ৪৭৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় ৩০ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের কারণে, ২১.৪ শতাংশ মোটরসাইকেল এবং প্রায় ১৯ শতাংশ দুর্ঘটনা বাসের কারণে ঘটেছে বলে জানানো হয়।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, মোট দুর্ঘটনার মধ্যে বেশিরভাগই গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা। ওই সময়ে ৫৬.৩৫ শতাংশ গাড়ি চাপার ঘটনা ঘটেছে। এরপরেই রয়েছে ১৮.৩৬ শতাংশ যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা।

তবে যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, মোটরসাইকেলে হেলমেট বাধ্যতামূলক, তিনজন না ওঠাসহ কড়া নজরদারির কারণে ২০১৮ সালের তুলনায় দুর্ঘটনার হার ৪.২৬ শতাংশ কমেছে।

পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনার ৩২.৩৮ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৭.৫১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে ও ২১.৩ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।

২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৫ জুন। ওইদিন ৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত হন। অন্যদিকে একদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ৩৬ জন।

বেপরোয়া গাড়ি চালনা, বিপদজনক ওভারটেকিংসহ বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ১২টি কারণ তুলে ধরে। সেইসঙ্গে দুর্ঘটনা রোধে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নসহ ১২টি সুপারিশও করা হয়েছে সমিতির পক্ষ থেকে।