মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আমি বল্লার চাকে ঢিল মারছি। রাজাকারদের তালিকা যা পেয়েছিলাম, যাচাই না করেই বে-আক্কেলের মতো কাজ করে ফেলছি। এটা বোকামি হয়েছে। আমি দুঃখিত। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁর ১১টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমার নাম যদি রাজাকারের তালিকায় আসতো আমি যে কষ্ট পেতাম, আমার যে সহকর্মী ভাইদের নাম এসেছে আমি ঠিক একইভাবে কষ্ট পেয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম রাজাকারের তালিকায় আসবে এটা অসম্মানজনক, দুঃখজনক। আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি, ক্ষমা চেয়েছি। তার অর্থ এই নয়, তালিকা হবে না। তারা যদি মনে করে থাকেন হুংকার দিলেই আমরা পিছিয়ে যাবো এটা ভুল। ওয়াদা করে যাচ্ছি, রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ হবে ইনশাল্লাহ্।

মন্ত্রী জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা নিয়ে আর তালিকা প্রকাশ করা হবে না। নিবিড় অনুসন্ধান চালিয়ে উপজেলাভিত্তিক রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হবে। এবার আর ভুল হবে না।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান, আগামী জানুয়ারি মাসে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। ইতিমধ্যে তালিকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন সেই তালিকা আবার যাচাই করার কাজ চলছে। তালিকা প্রকাশের পর নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হবে। কারও কোনো অভিযোগ থাকলে জানাতে পারবেন। পুনরায় সেসব অভিযোগ তদন্ত করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগামী ২৬ মার্চের আগেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ছবিসহ পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতাব্যবস্থা চালু করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আগামী জুলাই মাস থেকে ১৫ হাজার টাকা করার চিন্তাভাবনা চলছে। এ ছাড়া স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেওয়া হবে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নবিজড়িত স্থানগুলো সংরক্ষণের জন্য ইতিমধ্যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কবর সংরক্ষণ করা হবে। প্রতিটি জেলা-উপজেলা থেকে বধ্যভূমিসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নবিজড়িত স্থানের তালিকা নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির উপজেলায় উপজেলায় বরাদ্দ পৌঁছে যাবে।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা উচিত। একে চলমান রাখা যাবে না। বরং রাজাকারের তালিকা প্রকাশের কাজ চলমান রাখতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে থাকার আগেই রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।