র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) হাতে গ্রেফতার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গ্রেফতারের পর আওয়ামী যুবলীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজীবকে বহিষ্কারের খবর বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে।

যুবলীগের পক্ষ থেকে ঘোষণা ছিল এমন, চলমান অভিযানে যুবলীগের কেউ দুর্নীতি বা অন্য কোনো কারণে গ্রেফতার হলে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র‌্যাব।

চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে রাজীব গা ঢাকা দিয়েছিলেন বলে জানায় র‌্যাব।

রাজীবের বিরুদ্ধে অবৈধ দখল, চাঁদাবাজি, এলাকায় মাস্তানি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, নিজস্ব লোক দিয়ে ট্রাক-লেগুনাস্ট্যান্ড ও অটোরিকশা থেকে চাঁদা নেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। দলীয় প্রার্থী ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে হারিয়ে নির্বাচিত হন তিনি।

মোহাম্মদপুর এলাকায় যুবলীগের রাজনীতি দিয়েই রাজীবের রাজনৈতিক জীবন শুরু। অল্পদিনেই নেতাদের সান্নিধ্যে মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নেন। এরপর অভিযোগ আছে, কেন্দ্রীয় যুবলীগের এক নেতাকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন রাজীব।

যুবলীগের সাইনবোর্ড আর কাউন্সিলরের পদটি ব্যবহার করে এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন রাজিব। বিগত চার বছরে আট থেকে ১০টির বেশি নামীদামি ব্র্যান্ডের গাড়ি কিনেছেন। গুলশান ও মোহাম্মদপুরে আটটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার। মোহাম্মদীয়া হাউসিং সোসাইটির ১নং রোড এলাকায় পানির পাম্পের জন্য নির্ধারিত জায়গায় বাড়ি বানিয়েছেন। বাড়ির জায়গাটির দামই প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।

কমিশনার হওয়ার পরপরই তিনি বাহিনী দিয়ে প্রচারণায় বনে যান স্বঘোষিত ‘জনতার কমিশনার’। তবে কথিত এই ‘জনতার কমিশনার’-এর বিরুদ্ধে জনতার কাছ থেকেই মাসে কোটি টাকা চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, চন্দ্রিমা হাউসিং, সাত মসজিদ হাউসিং, ঢাকা উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকায় দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে টং দোকানদার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া রাজীবের বিরুদ্ধে।