বুয়েটের ছাত্র আবরারের নৃশংস হত্যাকাণ্ড একদিকে বাক-স্বাধীনতার ওপর নিষ্ঠুরতম আঘাত ও অন্যদিকে ছাত্রসংগঠন তথা শিক্ষাঙ্গনের ওপর দুর্বৃত্তায়িত অসুস্থ রাজনৈতিক প্রভাবের নিষ্ঠুর পরিণতি উল্লেখ করে অবিলম্বে বুয়েটসহ দেশের সকল ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষাঙ্গনকে সম্পূর্ণ দলীয় রাজনীতিমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

আজ (১০ অক্টোবর) প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি বলে, “দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একের পর এক রক্তক্ষয়ী ছাত্র সহিংসতা, ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম, দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবদুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতা এবং একই কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যত নিষ্ক্রিয়তার ফলে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী আদর্শিক ছাত্র আন্দোলনের অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি।”

আবরার হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ এবং ছাত্র আন্দোলনের গৌরবময় ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সকল ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষাঙ্গনকে সম্পূর্ণ দলীয় রাজনীতিমুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছে টিআইবি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের যে গৌরবোজ্জ্বল অতীত ও অবিস্মরণীয় ভূমিকা তাকে ম্লান করে দিচ্ছে ছাত্রসংগঠনের ওপর দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির নিষ্ঠুর প্রভাব। ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মী কর্তৃক বাক-স্বাধীনতার ওপর নৃশংস আঘাতের সূতিকাগার রাজনৈতিক নেতৃত্বের একাংশের পরমত অসহিষ্ণুতা ও অসুস্থ একচ্ছত্রায়িত ক্ষমতার রাজনীতি, যা এক বিধ্বংসী তাড়নায় বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র আন্দোলনের গৌরবকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।”

“আমরা উদ্বিগ্ন এবং শঙ্কিত। আশাকরি রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্বশীল অংশ আমাদের এই উৎকণ্ঠার গভীরতা উপলব্ধি করতে পারবেন, অনুতপ্ত হবেন এবং শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ও সর্বোপরি আইনের শাসন এবং প্রজন্মের কল্যাণ বিবেচনায় ছাত্রসংগঠনগুলোকে অসুস্থ রাজনীতির কালো থাবামুক্ত করবেন।”

“একইসাথে, নিজ উদ্যোগে বাংলাদেশে সুস্থ রাজনীতির বিকাশের স্বার্থে রাজনৈতিক দলকে সত্যিকার অর্থেই সুস্থ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তরিত করতে আমূল সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করবেন,” বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।