ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই নিয়ম লঙ্ঘন করে ছাত্রলীগের ৩৪ নেতা ভর্তি হয়েছেন এমন অভিযোগ এনে, এ ঘটনার প্রতিবাদে ‘দুর্নীতির ভূত তাড়াও’ শিরোনামে অভিনব পন্থায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। বি-বার্তা

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তারা এই মিছিল করেন। এসময় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আগুন জ্বালিয়ে অভিনব পন্থায় ‘ভূত তাড়ানো’ মহড়া দেয় শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিজনেস অনুষদের ডিনের পদত্যাগ দাবি করেন।

মিছিলে তারা ভূত তাড়ানোর নানা স্লোগান দেন এবং প্রতিবাদ সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এসময় তারা ‘ভূত তাড়াবো, ভূত তাড়াবো, ঢাবি ভিসির ভূত তাড়াবো, ডিনের ভূত তাড়াবো, জিনাত হুদার ভূত তাড়াবো’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকে।

এসময় তিনটি দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- যারা অবৈধভাবে ভর্তি হয়েছেন তাদের ছাত্রত্ব ও ডাকসুর পদ বাতিল করে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও খালি পদগুলোতে দ্রুত উপনির্বাচন দেয়া। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগ করা।

কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, দুর্নীতি এবং জালিয়াতির বিরুদ্ধে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ এখানে জড়ো হয়েছি। জালিয়াতির যে ভূত প্রশাসনের উপর ভর করেছে সে ভূত তাড়ানোর জন্য আজকে আমরা এ বিক্ষোভ মিছিল করেছি। এর মাধ্যমে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং বাণিজ্য অনুষদের ডিন সহ রোকেয়া হলের প্রভোস্ট জিন্নাত হুদার পদত্যাগ দাবি করছি।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী চয়ন বড়ুয়া বলেন, ৩৪ জনকে ঢাবি ভিসি চিরকুটের মাধ্যমে ভর্তি করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে ডাকসুতে রয়েছেন। এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি ডাকসু নির্বাচনের নীলনকশা অনেক পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিল। এই ভিসিকে অপসারণ করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং বিজনেস অনুষদের ডিনকে পদত্যাগ করতে হবে। রোকেয়া হলের দুর্নীতির জন্য জিন্নাত হুদাকে পদত্যাগ করতে হবে।

মিছিলে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, ফারুক হাসান, বিন ইয়ামিন মোল্লা এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন, রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী দীপ্তি, ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, চয়ন বড়ুয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রলীগের ৩৪ জন সাবেক ও বর্তমান নেতা ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতে নিয়ম লঙ্ঘন করে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ছাত্রলীগের ৩৪ জন নেতার ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি বলে গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম।