অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 463 বার
‘আমারে আমনেরা আর মারেন না, বেশী কথা কস না কথা না শুনুলে তুইলা নিয়ে যামু’। কথাগুলো কোনো ফিল্মের নয় বাস্তবেই ঘটেছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভায়। ইভটিজিংয়ে বখাটেদের থাবায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়ে এ কখাগুলো বলছিলেন ভুক্তভোগী কোমলমতি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুলছাত্রী।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতই সে স্কুলে যাচ্ছিল। পথে চৌমুহনী কলেজ রোড়ে পাটোয়ারী মসজিদের সংলগ্ন গলিতে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীটিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বখাটেরা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন।
বেগমগঞ্জে সরেজমিনে ঘুরে এবং পরিসংখ্যানে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, চৌরাস্তা সংলগ্ন বেগমগঞ্জ সরকারী কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র-ছাত্রী ৭৭১ জন, বেগমগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র-ছাত্রী ৮০০ জন, ডেল্টা জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র-ছাত্রী ৬০০ জন, মদনমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র-ছাত্রী ২৪০০ জন,গণিপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র-ছাত্রী ২১৭৪ জন,মোশারফ গ্রামার স্কুলে(ইংলিশ মিডিয়াম) মোট ছাত্র-ছাত্রী ৯৭জন, ক্র্যামবিয়ান স্কুলে মোট ছাত্র-ছাত্রী ২০০ জন, গ্রিনভিউ রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুলে মোট ছাত্র-ছাত্রী ১৫০ জন।
৮টি স্কুলে প্রায় সাত হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রী বখাটেদের হাতে জিম্মি।
অভিভাবক ও ছাত্রীদের দেওয়া তথ্যে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বখাটেদের স্থানগুলো যেমন চেীরাস্তার বাসস্ট্যান্ডের সামনে, ফুলের দোকান, শশ্মান গেটে, স্কুল শুরুর সময় ফুটপাতে, ফুসকা দোকানগুলোর সামনে, দিঘীর পাড়ে, সিঙ্গার রোড়ের মোড়ে, ডেল্টা স্কুলের ভিতরে শ্রমিকদের বাসার সামনে, মোরশেদ কমপ্লেক্সের সামনে, টক্কার পোল গলি থেকে গার্লস স্কুল গেট পর্যন্ত, পোড়াবাড়ী রোড়ে, পাটোয়ারী মসজিদ সংলগ্ন গলিতে, শিশু হাসপাতাল, নাবিলা হাসপাতালের সামনে, ইউরো টাওয়ারের সামনের গলিতে, কলেজ রোড়ের দোকানগুলোর সামনে, রশিদের দোকানের মোড়ে, কিসমত করিমপুর কাজী অফিসের সামনে, আইডিয়াল স্কুল মোড়ে, রুপনগর, আটিয়া বাড়ী পোলের মোড়ে আনোগোনা বেশি দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন,বখাটেদের উৎপাতে আমরা আতঙ্কিত। বিশেষ করে স্কুল শুরুর সময় সকাল ৯:৩০ টা থেকে ১০:৩০ পর্যন্ত এবং স্কুল ছুটির সময় বিকাল (৪:০০টা থেকে ৪:৩০টা পর্যন্ত। বখাটেরা রাস্তায় মোটরসাইকেলে উচ্চস্বরে হর্ণ বাজায়, শিস দেয়, মেয়েদেরকে অশালীন বা অপমানজনক নামে ডাকে, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে শারীরিক আঘাত ও কুপ্রস্তাব দিয়ে থাকে। মেয়ে বাসায় এসে এসব কথা বললে প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে থানায় অভিযোগ করি। কিছুদিন দমে থাকলেও আবার আগের মতই হয়। আমরা মেয়েকে স্কুলে দিয়ে এসে স্কুল ছুটি শেষে বাসা না ফেরা পর্যন্ত চিন্তিত থাকি।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মো: হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আসামিরা জামিনে বের হয়ে আরোও বেপরোয়া হচ্ছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামিনে বের হয়ে যদি পুনরায় ইভটিজিং করে অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এরা প্রভাবশালী কোনো মহলে আশ্রয় প্রশয় পাচ্ছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে হারুনুর রশীদ বলেন, হ্যা তাতো বটেই। প্রভাবশালী বলেন আর রাজনীতি বলেন আশ্রয় প্রশয় তো অবশ্যই পাচ্ছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব আলম বলেন, ইভটিজিংকারীদের কোনো ছাড় নেই। যতই প্রভাবশালী বা রাজনৈতিক ব্যক্তি হোক না কেন ,আইন সবার জন্য সমান।সুত্র-বিডি মর্নিং
Leave a Reply