বিমান দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা দিতে হবে। আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন, ১৯৯৯) আইন ২০১৯ খসড়ায় এমন বিধানই রাখা হয়েছে।

সোমবার (২৬ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

তিনি বলেন, আকাশপথে পরিবহন আইন-২০১৯ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। উড়োজাহাজের যাত্রীদের অধিকার সুরক্ষার জন্য এই আইনটি করা হচ্ছে। আগে এ নিয়ে দেশে কোনও আইন ছিল না। ফলে নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবার কম ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। যদি মন্ট্রিল কনভেনশন অনুযায়ী আমাদের আইন থাকতো, তাহলে যাত্রীর পরিবার ক্ষতিপূরণ পেতো কয়েক গুণ বেশি। একেকজন কমপক্ষে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা করে পেতো। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই যাত্রীদের সুরক্ষা দিতে আইনটি করা হচ্ছে।

তিনি জানান, এ আইনে মন্ট্রিল কনভেনশন ১৯৯৯ অনুযায়ী কোনও ফ্লাইটে যাত্রী নিহত হলে ক্ষতিপূরণ আদায়ের পাশাপাশি যাত্রী আঘাতপ্রাপ্ত হলে এবং লাগেজ হারিয়ে গেলেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কোনও বিমান কোম্পানী আইনটি ভঙ্গ করলে অর্থাৎ যাত্রীর মৃত্যু, আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া কিংবা লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার পরেও উড়োজাহাজ কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করলে সেই কোম্পানির বিরুদ্ধে এই আইনের পৃথক ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার। সেক্ষেত্রে মন্ট্রিল কনভেনশন ১৯৯৯ অনুযায়ী যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় যাত্রীপ্রতি এক লাখ ৪০ হাজার ডলার করে জরিমানা করা হবে ওই উড়োজাহাজ কোম্পানিকে। এই টাকা আদায় করবে সরকার। পরে তা যাত্রীকে দেওয়ার ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। এছাড়া ব্যাগ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করলে সংশ্লিষ্ট উড়োজাহাজ কোম্পানির কাছ থেকে প্রতিকেজির জন্য ৭০ ডলার করে জরিমানা আদায় করবে সরকার।

আইন বাস্তবায়নের ফলে উড়োজাহাজে ভাড়া বাড়বে কিনা—এ প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘বিমান ভাড়া বাড়বে না। কারণ ক্ষতিপূরণের এই টাকা বিমান কর্তৃপক্ষ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছ থেকে নেবে।’