কক্সবাজারে বেড়াতে এসে অতিরিক্ত ইয়াবা সেবনের কারণে স্বর্না রশিদ (২২) নামের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার ভোরে কক্সবাজারের একটি হোটেলে এই ঘটনা ঘটে। স্বর্না রশিদ প্রাইভেটে ব্রিটিশ কাউন্সিলে “এ লেভেল” এ অধ্যয়নরত ছিল। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকের মতে তিনি অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন করেছিলেন। পুলিশ এ ঘটনায় ওই ছাত্রীটির প্রেমিক ওয়ালী আহমদ খানকে গ্রেফতার করে গতকালই কারাগারে পাঠিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, স্বর্ণা রশিদ রাজধানী ঢাকার কোতোয়ালী চকবাজারের ৭ নম্বর বেগম বাজার এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হারুন উর রশিদ পাপ্পুর কন্যা। কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ পরিদর্শক মোঃ শরীফ উল্লাহ স্বর্ণার পারিবারিক সুত্রের বরাত দিয়ে আরো জানান, মূলত স্বর্ণা তার মামার বাড়ীতে যাবার কথা বলেই বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার চলে আসেন।
শুক্রুবার রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মৃত্যুর খবর পেয়ে গতকাল সকালে ব্যবসায়ী বাবা সহ পরিবারের আরো কয়েক সদস্য ছুটে আসনে কক্সবাজারে। পুলিশের উপ পরিদর্শক জানান, মেয়েটি বাড়ীতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চলে আসেন কক্সবাজারে। শোকাহত বাবার আফসোসের যেন শেষ নেই। তিনি কন্যার শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। গতকাল লাশের ময়না তদন্ত শেষে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, স্বর্ণা রশিদ (২১) নামের ওই মেধাবী ছাত্রী তার বন্ধু-বান্ধবের সাথে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছিলেন। তারা ছিলেন সংখ্যায় ১০/১১ জন। শুক্রুবার সকালে কক্সবাজার পৌঁছে হোটেল জামান নামের একটি হোটেলে তারা কক্ষ ভাড়া নেন। বিকালে সৈকত ভ্রমণ শেষেই হোটেল কক্ষে ফিরে বন্ধু-বান্ধব সবাই বসে যান মাদক সেবনে। সন্ধ্যার পর পরই মাদকের ঘোরে হুঁশ হারিয়ে ফেলেন মেধাবী ছাত্রী স্বর্ণা রশিদ। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।

জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী জানান-‘ সন্ধ্যার পর মেয়েটিকে জরুরি বিভাগে যখন আনা হয় তখন আমি তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিটে ভর্ত্তি দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ঢাকায় ফিরে যাবার কথা বলে সিটে ভর্ত্তি না হয়ে ফিরে যান হোটেল কক্ষে।’
ডাঃ শাহীন আরো বলেন, সঙ্গীরা মাদকসেবী মেয়েটিকে নিয়ে যাবার বেশ কিছুক্ষণ পর আবারো হাসপাতালে আসেন। তখর রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টা। ডাঃ শাহীন মেয়েটিকে পরীক্ষা করে দেখেন ততক্ষনে তার প্রাণ বায়ু নিভে গেছে। ডাঃ শাহীনের মতে বেশী পরিমাণে (ওভার ডোজ) ইয়াবা সেবন করায় তার মৃত্যু হয়েছে।
ব্যাপারটি নিয়ে তাৎক্ষনিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে স্বর্ণাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা সহপাঠিদের অনেকেই পালিয়ে যান। তবে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হন ওয়ালী আহমদ খান নামের এক তরুনকে। আটক ওয়ালী ঢাকার ২২ সিদ্ধেশ্বরী রোডের মনিমান টাওয়ারের বাসিন্দা আলী রেজা খানের পুত্র। পুলিশ তাকে সন্দেহজনক ধারায় আদালতে সোপর্দ্দ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।