অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ জুলাই ৯, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 353 বার
আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ ও যুবলীগের দুই নেতার হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা জামিনে মুক্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে তিনি টাঙ্গাইল কারাগার থেকে মুক্তি পান।
দীর্ঘ পৌনে তিন বছর কারাভোগের পর মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
টাঙ্গাইল কারাগারের জেলার আবুল বাশার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রাতে আমানুর রহমান খান রানার জামিননামা কারাগারে এসে পৌছায়। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সকাল পৌনে ৯টার দিকে বের হয়ে যান।
গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বিভাগের বেঞ্চ হাইকোর্টের দেওয়া স্থায়ী জামিন বহাল রাখেন। রাষ্ট্রপক্ষের করা জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করেন আদালত। আদালতে রানার পক্ষে শুনানী করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় টাঙ্গাইলে তাঁর কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাসার সামনে । এ ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত করে। ২০১৪ সালের আগস্টে এ মামলার আসামি আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেফতার হন। আদালতে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে সাংসদ আমানুর রহমান খান ও তাঁর তিন ভাই সাবেক পৌর মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার এ হত্যাকান্ডের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপর আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান। এরপর ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আমানুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ মামলায় ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এরপর একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর দন্ডবিধির ৩০২/১২০/৩৪ ধারায় এমপি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। এই মামলায় রানা হাইকোর্ট থেকে আগেই জামিন পেয়েছেন।
অপরদিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল করে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন।ঘটনার পরদিন ১৭ জুলাই শামীমের মা আছিয়া খাতুন এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে। এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ গত বছর ১১ মার্চ, শাহাদত হোসেন ১৬ মার্চ এবং হিরণ মিয়া ২৭ এপ্রিল আদালতে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন এমপি আমানুর রহমান খান রানার দিক-নির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিলো।
Leave a Reply