ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হুমকিতে দেশ ছাড়া বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেছেন, ‘যারা রোজা রাখতে চায় তাদের অধিকার আছে রোজা রাখার।যারা রোজা রাখতে চায় না,তাদেরও অধিকার থাকা উচিত রোজা না রাখার।’

তার মতে প্রতিটি মানুষেরই ধার্মিক হওয়ার বা না হওয়ার অধিকার রয়েছে ।

সেজন্য চীনের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রোজা নিষিদ্ধ করার আইনটির নিন্দা জানান এই লেখিকা। আজ বৃহস্পতিবার নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তসলিমা নাসরিন।

তার ওই স্ট্যাটাসের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো – ‘ধর্ম যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার।যার ধর্ম পালন করতে ইচ্ছা করে, সে পালন করবে। যার ইচ্ছা নেই, সে করবে না। এ বিষয়ে রাষ্ট্র বা সমাজ ধর্ম পালন করতে কেন বাধ্য করবে? রাষ্ট্র কিন্তু সবার জন্য, শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠদের জন্য নয়, সংখ্যালঘুদের জন্যেও।

চীনের সরকার দেশটির মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রোজা নিষিদ্ধ করেছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা, কর্মী ও শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কারও বেলায় অবশ্য এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়। স্বাস্থ্যের কারণে শিক্ষার্থীদের রোজা রাখা ঠিক নয় বুঝি, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা-কর্মীদের মধ্যে কমিউনিজমে এবং নাস্তিকতায় বিশ্বাসী হওয়ার শর্ত যেহেতু আছে, তাদেরও রোজা রাখাটা হয়তো উচিত নয়।

কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই তো নাস্তিক নয়। তারা রোজা রাখতে চাইলে তাদের কেন বাধা দেয়া হবে? সরকার নিশ্চয়ই বোঝাতে চাইছে, রোজা রাখলে যেহেতু শরীরে ক্লান্তি এসে ভর করে, দিনের বেলায় অফিসের সরকারি কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। কিন্তু অনেকে যারা রোজা রেখেও দিব্যি ক্লান্তিহীন কাজ করে যেতে পারে, তাদের রোজা রাখার অধিকার কেন থাকবে না? চীনের সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার কঠোর নিন্দা করছি আমি।’