জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ জানুয়ারি ৩০, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 370 বার
বিএনপি সাম্প্রতিক অতীতে ভারত বিরোধী অবস্থান নমনীয় করার নানা ইঙ্গিত দিলেও ভারতের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বিএনপি আবারো ভারত বিরোধী রাজনীতির দিকে ঝুঁকতে পারে বলে আভাস মিলেছে।
ইতিমধ্যে সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশিদের হত্যার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে তারা। কিন্তু বিএনপি নেতাদের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও কেন তারা ভারতকে একেবারেই আস্থায় নিতে পারেনি সে বিষয়ে দিল্লির বিবিসি বাংলার শুভজ্যোতি ঘোষ বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
এতে তিনি জানান, বাংলাদেশের এবারের সাধারণ নির্বাচনের বেশ কয়েকমাস আগে থেকেই বিএনপি নেতারা যেভাবে দিল্লি সফর করছিলেন তাতে এ বার্তা পরিষ্কার ছিলো যে, তারা ভারতের সাথে সম্পর্ক নতুন করে শুরু করতে চান।
গতবছর ভারতে এসে বিএনপি নেতারা ক্ষমতাসীন বিজেপির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও দিল্লির বিভিন্ন থিংকট্যাংকের সাথে বৈঠকে বসেন।
বিবিসির পলিসি রিসার্চ সেলের অন্যতম একজন সদস্য অনির্বান গাঙ্গুলী বিবিসিকে বলেন, বিএনপি ভারত বিরোধিতা বদলাবে কি বদলাবে না সেটা সেকেন্ডারি। প্রথম কথা হচ্ছে-জামায়াতের সংগে তাদের সম্পর্কটা কি- তা পরিষ্কার করতে হবে। রাজাকারদের সারাজীবন তারা তোষামোদ করে গেছে। এসব চালাকি ওরা (বিএনপি) করতে থাকে।
এবারের নির্বাচনে বিএনপি তিস্তার মতো ইস্যুকেও একেবারে ব্যবহার করেনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতের ভূমিকায় এমন কিছু দেখা গেলো না যা বিএনপিকে খুশি করতে পারে। ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এবং ঢাকায় হাইকমিশনের দায়িত্ব পালন করা মুচকুন্দ দুবে এ বিষয়ে বলেন, বিএনপির এ ধরনের আউটরিচ নতুন কিছু নয়। গত এক দশক ধরে তারা এ চেষ্টা চালাচ্ছে।
ভারতের ভেতর তাদের হয়ে যারা লবিং করেন বলে বিএনপির ধারণা তাদের সংগে এসে দলের নেতারা দেখাও করছেন। কিন্তু সমস্যা হলো মানুষ তো মুখের কথায় নয়, বরং পুরোনো অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে চলে। আমরা কি করে ভুলি খালেদা জিয়ার আমলে দুদেশের সম্পর্ক একেবারে থমকে গিয়েছিলো।
বিবিসির মতে, কিন্তু ঘটনা হলো ঠিক সোয়া ছয়বছর আগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া যখন তার শেষ ভারত সফরে এসেছিলেন তখন দিল্লিও বলেছিলো অতীতে যা হবার হয়ে গেছে। দুইপক্ষের কেউ আর পেছন ফিরে তাকাবে না। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্কালীন মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিনের এমন মন্তব্য অর্থহীন হয়ে যায় যখন তত্কালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী ঢাকা সফরে গেলে খালেদা জিয়া তার সাথে দেখা করতে অস্বীকার করেন। তখন থেকে ভারতের সাথে বিএনপির সম্পর্কে আবারো অস্বস্তির শুরু।
ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনে বহুবছর কাজ করে আসা নিরাপত্তা বিশ্লেষক শান্তনু মুখার্জী এ বিষয়ে বলেন, প্রমাণ হলো যে বিএনপির পাকিস্তান স্টান্ড এখনো রয়েছে। আমাদের পূর্ব উত্তরে উলফা এবং অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে খালেদা জিয়ার আমলে। এটা খুব ভয়ংকর।
সাম্প্রতিক নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী এবং ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরামের সাথে বিএনপির এলান্সেকেও ভারত ভালোভাবে নেয়নি। আবার ড. কামাল হোসেনের মতো লোক বিএনপি বা জামায়াতের হাত ধরে রাজনীতি করবেন সেটিও মেনে নেয়া কঠিন। নির্বাচনের জন্য এলায়েন্স হতেই পারে। কিন্তু সার্বভাৈমত্ব এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারত কোনোকিছুতে আপোষ করবে না।
আরও পড়ুনঃ সংসদে এসে সরকারের ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিন: ঐক্যফ্রন্টের প্রতি নাসিম
দিল্লিতে অনেকে আবার মনে করেন, বিএনপির নেতৃত্বে যতদিন তারেক রহমান আছেন ততদিন দলটিকে বিশ্বাস করা ভারতের পক্ষে কঠিন।
Leave a Reply