বাংলাদেশে পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নে ৫০ কোটি ডলার (প্রায় ৪ হাজার ১শ’ কোটি টাকা) ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এ ব্যাপারে সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে একটি ঋণ চুক্তি সই হয়েছে।

বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ডানড্যান চেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো সুষম খাদ্য এবং উন্নত স্বাস্থ্য ও প্রজনন সেবা দেয়ার মাধ্যমে পারিবারিক পর্যায়ে গবাদিপশুর স্বতন্ত্র উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা।

চুক্তি শেষে মনোয়ার আহমেদ বলেন, এটা কোনো একক প্রকল্প নয়, এটি সার্বিকভাবে প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নে সহায়তা দেবে।

বাংলাদেশের প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন যাতে দ্রুত হয় এজন্য নিয়মিত বৈঠকসহ মনিটরিং করা হচ্ছে। তাছাড়া ধীর গতির প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়াতে এবং প্রকল্প তদারকির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি রয়েছে।

ডানড্যান চেন বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পের লক্ষ্য হলো সাড়ে ৫ হাজার উৎপাদক সংগঠনকে প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যমে ভ্যালু চেইন তৈরি করা। মার্কেট লিংকেজ উন্নয়ন, নিরাপদ প্রাণিজ উৎপাদন ব্যবস্থা, টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশবান্ধব প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, জ্ঞান প্ল্যাটফর্ম এবং প্রাণিসম্পদ বীমা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং লজিস্টিক সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন করা।জাতিসংঘ-প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন

প্রকল্পটির ৪টি ধাপ রয়েছে। এগুলো হলো, প্রোডাক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট, মার্কেট লিংকেজ অ্যান্ড ভ্যালু চেইন ডেভেলপমেন্ট, ইমপ্রুভিং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট রিজিলাইনস অব লাইভস্টক প্রোডাকশন সিস্টেম এবং ম্যানেজমেন্ট মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন। প্রকল্পটি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ প্রকল্পে বাস্তবায়িত হবে।

প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মোট প্রাক্কলিত খরচ ৪ হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩৯৪ কোটি ৬৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের জন্য আইডিএ ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে বর্তমানে প্রকল্পটির জন্য ৪৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার ব্যবহার করা হবে।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের দেয়া ৫০ কোটি ডলার ঋণ ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে পরিশোধযোগ্য। এক্ষেত্রে উত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক ০.৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং ১.২৫ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে।