মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশুটির শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) থেকে সে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (পিআইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রয়েছে। সোমবার (১০ মার্চ) সকালে শিশুটির স্বজন ও তার চিকিৎসার জন্য গঠিত বোর্ডের একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। শিশুটির মামাতো ভাই বলেন, চিকিৎসক আমাদের জানিয়েছেন, তার অবস্থা এখনও অপরিবর্তিত। লাইফ সাপোর্টেই আছে।

মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, শিশুটির লাইফ সাপোর্ট একবারের জন্যও খোলা হয়নি। সে এখনও সংকটাপন্ন।  তিনি আরও বলেন, শিশুটির অবস্থা অপরিবর্তিত। সে বেঁচে থাকার লড়াই করছে। এর আগে, রোববার (৯ মার্চ) গভীর রাতে ফেসবুকে শিশুটির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় শিশুটির লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।  এরপর রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে হাসপাতালের পিআইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট নেওয়া হয়।

বর্তমানে শিশুটি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) চিকিৎসাধীন রয়েছে।

সেখানে হাসপাতালের প্রধান সার্জনকে প্রধান করে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডে রয়েছেন সার্জিক্যাল বিশেষজ্ঞ, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, প্লাস্টিক সার্জন, শিশু নিউরোলজি বিভাগ, অ্যানেসথেসিয়া, শিশু হৃদরোগ বিভাগ, শিশু বিভাগের সার্জন, ইউরোলজি বিভাগ ও থোরাসিক সার্জন বিভাগের চিকিৎসকেরা। এদিকে, শনিবার (৮ মার্চ) ভুক্তভোগী শিশুর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। এতে ভুক্তভোগীর বড় বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সবশেষ রোববার (৯ মার্চ) মধ্যরাতে আদালতে আসামিদের রিমান্ড আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে মূল অভিযুক্ত ভুক্তভোগী শিশুর বোনের শ্বশুরকে ৭ দিন, স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুর প্রত্যেকের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

মাগুরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মতিন এ আদেশ দেন।