মায়ের সাথে পরকীয়া প্রেমিকের দৈহিক সম্পর্ক দেখে বিপুল হোসেনকে (৩৫) হত্যা করা হয়। নিহত বিপুল চৌগাছা উপজেলার হিজলি গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে। এঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হাতুড়ি ।

শনিবার যশোরের মণিরামপুর ও চৌগাছা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-চৌগাছা উপজেলার হিজলী গ্রামের আবু শামার স্ত্রী ফুলবানু বেগম (৩৮) ছেলে সবুজ হোসেন (১৯), ও একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ তুহিন (২৫)। আটককৃতদের আদালতে হাজির করলে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি দেয়।

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, শনিবার দুপুরে ডিবি তত্ত্ববধানে চৌগাছা থানা পুলিশের সহায়তায় মনিরামপুর উপজেলার ]গোপালপুর এলাকায় অভিযান বিপুল হোসেন হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী সবুজ হোসেন ও তার মা ফুলবানু বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক সবুজের সহযোগী মোহাম্মদ তুহিনকে হিজলী বাজার থেকে ওইদিন বিকেলেই গ্রেফতার করা হয়।

তাদের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে চৌগাছা পুড়াপাড়া জনৈক ইদ্রিস আলীর পাটক্ষেতের ভিতর থেকে দুটি সিমসহ ভিকটিমের একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে ঘটনা স্থল ও পলাতক আসামি চৌগাছা থানার দক্ষিণ কয়ারপাড়ার গ্রামের রফিকুলের বসতবাড়ীতে অভিযান চালানো হয়।। সেখান থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে চৌগাছা বাজারের যে দোকান থেকে চটের বস্তা কিনেছিল, সেটির নমুনা চট জব্দ করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এস আই শামিম হোসেন জানান, আটককৃতদের রোববার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহম্মদ মাহাদী হাসানের আদলতে হাজির করলে তারা ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে হত্যার বর্ননা দেয়।
হত্যাকান্ডের বর্ণনায় আসামিরা আদালতকে জানায়, আসামি ফুলবানুর স্বামী আবু শামা ১০/১২ বছর মালেশিয়ায় থাকে। নিহত বিপুলের সঙ্গে ফুলবানুর তিন বছর ধরে পরকীয়া প্রেম ও দৈহিক সম্পর্ক ছিল। তাদের অনৈতিক সম্পর্ক ছেলে সবুজ দেখে ফেলে। বিপুলকে সতর্ক করলেও সে শোনেনি। ফলে সবুজ তার ভগ্নিপতি রফিকুলের সাথে পরিকল্পনা করে বিপুলকে হত্যা করে। ঘটনার দিন (৪ জুন) সবুজের ভগ্নিপতি দক্ষিণ কয়ারপাড়া গ্রামের লালনের ছেলে রফিকুল গরু কেনার কথা বলে বিপুলকে ডেকে নিয়ে তার বসত ঘরে নিয়ে শ্বাসরোধ ও মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। এসময় গোপনাঙ্গে চেপে ধরে হত্যা করে বস্তার মধ্যে ঢুকায়। পরে গভীর রাতে বেড়গোবিন্দপুর বাওড় এলাকার ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়।
গত ৫ জুন নিহত বিপুল হোসেনের (৩৫) লাশ উদ্ধার করে চৌগাছা থানা পুলিশ। এই ঘটনায় ওই দিন নিহতের ছেলে রকি আহমেদ চৌগাছা থানায় মামলা দায়ের করে।