নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে সমাজ পতিদের হাতে গণধর্ষনের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধু। চাঁদার টাকা দিয়েও তাদের লালসার হাত থেকে রক্ষা পাননি এই গৃহবধূ (২১)। এ ঘটনায় গণধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষিতা।

শনিবার বিকালে কবিরহাট থানায় দায়েরকৃত মামলায় গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার (৩ জুন) বিকালে পাশ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলার চরবৈশাখী গ্রাম থেকে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের পূর্ব নবগ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন গৃহবধূ (২১) ও তার স্বামী (২৫)।ওইদিন কাজ শেষ না হওয়ায় তারা আত্মীয়ের বাড়িতে রাতে অবস্থান করলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় সমাজ কমিটির সভাপতি আব্দুস সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের নেতৃত্বে ৬-৭জন ব্যক্তি গৃহবধূর আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন। এসময় তারা ঘরে ডুকে ওই দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক অবৈধ বলে তাদের বিয়ের কাগজপত্র দেখতে চায়। কিছু বুঝে উঠার আগে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে আটক করে বাড়ীর পাশের একটি জায়গায় নিয়ে তাদের সাথে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায় সমাজ পতিরা।

রাত যখন গভীর তখন দম্পতিতে ছেড়ে দিতে তাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে আব্দুস সাত্তার ও আবুল কালাম। পরে ওই গৃহবধূর স্বামী তার খালাতো ভাইকে বিষয়টি মোবাইলে জানালে সে ৩৫হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসেবে নিয়ে সাত্তারের হাতে দিয়ে আরও ২৫ হাজার টাকা পরে দিবে মর্মে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে। টাকা নিয়ে সাত্তার গৃহবধূকে নিরাপত্তা দিবে বলে তার মেয়ের বাড়িতে নিয়ে যায় এবং তার স্বামী ও খালাতো ভাইকে পিটিয়ে জখম করে।

নির্যাতিতা গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, সাত্তার রাতে তার মেয়ের বাড়ি থেকে গৃহবধূকে তার স্বামীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার নামে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় ৫-৬ জন লোকের হাতে ছেড়ে দেয়। এসময় গৃহবধূ তাদের কাছ থেকে বাঁচতে সাত্তারকে বাবা ডেকেও রক্ষা পাননি। পরে তারা রাস্তার পাশের একটি কলা বাগানে নিয়ে গৃহবধূকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।

কবিরহাট থানার ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাসান বলেন, গত বৃহস্পতিবার শ্লীলতাহানীর অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূও স্বামী। পরে (শনিবার) বিকালে গৃহবধূ নিজেই ওই মামলার সম্পূরক হিসেবে গণধর্ষণের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।