জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ মার্চ ৭, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 1509 বার
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির চার এহসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে র্যাব-১১’র সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার, পিবিজিএম, পিবিজিএমএস এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিরা হলেন- চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানা এলাকার মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী ওরফে লোন উলফ ওরফে ট্রুথ সিকদার (৩১), একই এলাকার মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূর (২৮), একই জেলার পাঁচলাইশ থানা এলাকার আসিফ ইবতিয়াজ মোহাম্মদ রিবাত (২৭) ও কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার হাফেজ মো. রাকিবুল ইসলাম (২৫)।
লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি দল ফতুল্লা থানার সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি জানান, মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী চট্টগ্রামের ইন্ডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অনার্স ও মাস্টার্স পাশ করে। সে ২০১৪ সালে অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে জসিম উদ্দিন রাহমানী ও আনোয়ার আল আওলাকীসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী লেখকের বক্তব্য শুনে উগ্রবাদের দিকে ধাবিত হয়। এরপর ২০১৬ সালে কথিত এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবিতে যোগদান করে।
মাশরুর চট্টগ্রামে একটি আন্তর্জাতিক হোটেলের পারচেজ ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন গ্রেপ্তারকৃত মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূর, হাফেজ মো. রাকিবুল ইসলামসহ আরও ৮-১০ জন যুবককে জেএমবিতে যোগদান করায়।
র্যাবের হাতে ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার হওয়া ইঞ্জিনিয়ার বুলবুল, জহিরুল ইসলাম পলাশ ও মাসুদ গাজীর সঙ্গেও মাশরুর আনোয়ার চৌধুরীর সাংগঠনিক যোগাযোগ ছিল। মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী চার মাস আগে পূর্বের চাকরি ছেড়ে ঢাকায় এসে অপর একটি আন্তর্জাতিক হোটেলে পারচেজ ম্যানেজারের পদে যোগদান করে সংগঠনের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে উচ্চ পর্যায়ের জেএমবি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। সে সম্প্রতি অনলাইনে টাইম বোমা তৈরির বিভিন্ন কৌশল রপ্ত করার চেষ্টা করছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তাদের নাশকতা করার পরিকল্পনা ছিল।
মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূর চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে এবং আসিফ ইবতিয়াজ মোহাম্মদ রিবাত একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে। তারা দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। মাশরুর আনোয়ার চৌধুরীর মাধ্যমে তারা দুজন ২০১৭ সালে জেএমবিতে যোগদান করে। তারা জেএমবির দাওয়াতি শাখার কাজ করে আসছিল।
হাফেজ রাকিবুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিল। অনলাইনের মাধ্যমে উপরিউক্ত জেএমবি সদস্যদের সঙ্গে রাকিবুলের পরিচয় ঘটে। রাকিবুলের পরিচয়ের সূত্র ধরেই মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী, মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূর ও আসিফ ইবতিয়াজ মোহাম্মদ রিবাতসহ আরও কিছু জেএমবি সদস্য সাইনবোর্ড এলাকায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিল।
Leave a Reply