রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণকারী একজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। তার নাম মজনু, বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। বুধবার শেওড়া রেলস্টেশন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং দুপুর দেড়টার দিকে তাকে কাওরানবাজারের র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আনা হয়। পরে সাংবাদিকদের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে লেফটেনেন্ট কর্নেল সরওয়ার বিন কাসেম জানান, গ্রেফতারকৃত মজনু একজন সিরিয়াল ধর্ষক ও এর আগেও সে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের কথা স্বীকার করে মজনু। সে জানায়, তার বাড়ি নোয়াখালির হাতিয়ার জাহাজমারা গ্রামে। বাবা ও স্ত্রী মারা গেছেন। বাড়িতে মা থাকলেও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ নেই তার। সে পেশায় ভবঘুরে হকার হলেও বিভিন্ন সময় চুরি ও ছিনতাই করতো।

একই সঙ্গে বিভিন্ন সময় সে মানসিক প্রতিবন্ধীসহ একাধিক গরীব ও ভিক্ষুক নারীকে ধর্ষণ করেছে বলেও স্বীকার করে।

প্রাথমিকভাবে র‍্যাবকে সে জানায়, রবিবার রাতে কুর্মিটোলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য যায় মজনু। সেখানে ওই শিক্ষার্থীর ব্যাগ দেখে সে ছিনতাইয়ের জন্য তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় সে ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে ও একই সঙ্গে হত্যারও চেষ্টা করে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জানায়, গ্রেফতারকৃত যুবককে ওই শিক্ষার্থীর সামনে হাজির করা হলে এক দেখাতেই তাকে ধর্ষক হিসেবে শনাক্ত করেন মেয়েটি।

র‌্যাব আরো জানায়, ধর্ষককে গ্রেফতারের পাশাপাশি তার কাছ থেকে ভুক্তভোগীর ব্যাগ, মোবাইল ফোন ও চার্জার উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও একটি টর্চ লাইট জব্দ করা হয়েছে। ধর্ষক মজনুর বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। সে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় বসবাস করতো। মাঝে মাঝে কুর্মিটোলা এলাকার পরিত্যক্ত ট্রেনের কামরায়ও থাকতো।

এর আগে র‌্যাব সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনের মধ্যে একজন স্বীকার করে। পরে সে বিস্তারিত ঘটনার বর্ণনা র‌্যাবকে জানায়। পরে র‌্যাবের পক্ষ থেকে ধর্ষককে মেয়েটির সামনে হাজির করা হয়।

এদিকে র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সরওয়ার-বিন-কাশেম জানান, এ বিষয়ে বিস্তারিত আজ বুধবার দুপুর দেড়টায় র‌্যাবের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পর ধর্ষণের শিকার হন এক শিক্ষার্থী। পরে এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে ঢাবি ক্যাম্পসসহ সারাদেশের শিক্ষাঙ্গন।