গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।তথ্যপ্রযুক্তি আইনে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক শফিক তুহিনের দায়ের করা একটি মামলায় রাত দেড়টায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল তাঁকে এফডিসির কাছে তাঁর অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে। গত সোমবার সন্ধ্যায় শফিক তুহিনের দায়ের করা এ মামলায় আসিফ আকবর ছাড়া আরও ৪/৫ জন অজ্ঞাত আসামি রয়েছে বলেও জানায় পুলিশ। সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিনের দায়ের করা তেজগাঁও থানার একটি মামলায় আসিফ আকবরের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা নম্বর ১৪। বুধবার সকালের দিকে মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সোপর্দ করা হবে।
শফিক তুহিন তাঁর দায়ের করা এজাহারে অভিযোগ করেছেন, গত ১ জুন আনুমানিক রাত ৯টার দিকে একটি চ্যানেলের ‘সার্চ লাইট’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসিফ আকবর তাঁর অনুমতি ছাড়াই তাঁর সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭ টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেছে। পরে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, আসিফ আকবর তাঁর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে অন মোবাইল প্রা. লি. কনটেন্ট প্রোভাইডার, নেক্সনেট লি. গ্যাক মিডিয়া বাংলাদেশ লি. ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাধুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছে।

শফিক তুহিন তাঁর এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, ঘটনাটি জানার পর তিনি গত ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অনুমোদন ছাড়া গান বিক্রির এই বিষয়টা উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন।
পোস্টের ক্যাপশনে আসিফকে উদ্দেশ্য করে তুহিন লিখেন, ‘এভাবে অনুমতিহীন ও স্বাক্ষরবিহীন অধিকার হরণ করে শুধু গীতিকার সুরকারদের অর্থ আত্মসাতই করেনি; জীবিত থাকতেই আমার মতো সব সৃষ্টিশীল মানুষদের মেধাস্বত্বকে করেছে ভীষণভাবে অপমান। এই যদি হয় স্বঘোষিত অডিও যুবরাজের অনৈতিক কর্মকান্ড তাহলে সত্যিকার অর্থে এদেশে সংগীতের ভবিষ্যত কোথায়!!? আর এরকম বঞ্চনার জন্যই একসময় শিল্পীদের নাম ওঠে দু:স্থ শিল্পীর তালিকায়!!’
শফিক তুহিন এর পোস্টের নিচে আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অশালীন মন্তব্য ও হুমকি দেন। পরের দিন রাত ৯ টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তার প্রায় ৩২ লাখ লাইকার সমৃদ্ধ ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড লাইভ ভিডিওর ২২ মিনিট থেকে তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন। ভিডিওতে আসিফ আকবর তাকে (শফিক তুহিন) শায়েস্তা করবেন এ কথা বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, তাকে যেখানেই পাবেন সেখানেই প্রতিহত করবেন। এই নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। আসিফ আকবরের এই বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছে। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তাঁর (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে।