নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা উপলক্ষে আসামিদের আদালতে তোলার সময় প্রধান আসামি নুসরাতের অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে হাসিখুশি দেখা গেলেও রায়ের পর কাঁদতে কাঁদতে কারাগারে গেছেন। শুধু সিরাজই নন, সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের সঙ্গে তাদের স্বজনদেরও কাঁদতে দেখা গেছে আদালত প্রাঙ্গণে। এছাড়া নুসরাতের পরিবারকে গালাগাল করেছেন কেউ কেউ। বিচারকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কোনো কোনো আসামির স্বজনরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রায়ের পর পুলিশ আসামিদের এজলাস থেকে নিয়ে কারাগারের পথে রওনা হয়। সে সময় আসামি জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদের মা লায়লী আক্তার বিলাপ করে বলেন, ‘ও হুতরে তোরে আঁর বুকের তুন কাড়ি লই যায়। তুই তো কোনো দোষ করস নো। আঁই কেন্নে তোরে বাঁচাইতাম। তোরে যারা হাসাইছে (ফাঁসিয়েছে) আল্লাহ হেতেগো বিচার করইবো।’
জাবেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নুসরাতের পা বাঁধা হলে পলিথিন থেকে কেরোসিন গ্লাসে ঢেলে তিনি নুসরাতের গায়ে ছিটিয়ে দেন এবং সব কাজ শেষে বোরখা খুলে পরীক্ষার হলে ঢুকে যান বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসামি ইমরান হোসেন ওরফে মামুনের বোন রিনা আক্তার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, নুসরাত আত্মহত্যা করেছে। তাকে কেউ হত্যা করেনি। আমার ভাই নির্দোষ। মামুন রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের শিকার। হত্যাকান্ডের সময় মামুন মাদরাসার মূল গেইটের পাশে পাহারায় ছিলেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসামি কামরুন নাহার মনির কোলে ছিল তার মাসখানেক বয়সী মেয়ে। রায় ঘোষণার পর শিশুটিকে কারারক্ষীদের কোলে দেখা গেছে। এ সময় সাংবাদিকরা মা-মেয়ের ছবি তুলতে গেলে মনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে মামলার ১৬ আসামিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে প্রিজন ভ্যানে করে ফেনী জেলা কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
রায় ঘোষণার পর বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ সব আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। কারাগারে দিকে যাওয়ার পথে স্বজনা আসামিদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করে। অনেক স্বজনকে ভ্যানের পাশে ঝুলতে দেখা গেছে। অনেককে ভ্যানের পেছনে ছুটতেও দেখা গেছে। এদের সবারই চোখে ছিল পানি।