বিদেশ | তারিখঃ অক্টোবর ১৪, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 662 বার
সিরিয় সরকার উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে সেনাবাহিনী পাঠিয়ে কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্কের অভিযান ঠেকাতে সম্মত হয়েছে বলে উত্তর সিরিয়ার কুর্দি নেতৃত্বাধীন প্রশাসন জানিয়েছে। এর আগে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, উত্তরাঞ্চলে সরকারি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যদিকে রোববার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে অবশিষ্ট সব সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিবিসি, সিএনএন।
গত সপ্তাহে শুরু হওয়া তুর্কি অভিযানের মূল উদ্দেশ্য কুর্দি বাহিনীগুলোকে সীমান্ত এলাকা থেকে উৎখাত করা।
উত্তর সিরিয়ার কুর্দি নেতৃত্বাধীন প্রশাসন বলছে, চুক্তি অনুযায়ী পুরো সীমান্ত জুড়ে সিরিয় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। এই সেনা মোতায়েন এসডিএফকে ‘তুরস্কের সেনা এবং ভাড়াটে বিদেশি সেনাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলো মুক্ত করতে সহায়তা করবে’ বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা।
গত সপ্তাহে কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস বা এসডিএফ-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলো তীব্র বোমা হামলার শিকার হয়েছে। সীমান্তবর্তী দু’টি শহরে তুরস্কের বাহিনী শক্ত অবস্থান নিতে শুরু করেছে।
তুরস্কের আগ্রাসন এবং ঐ এলাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কারণ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পশ্চিমা জোটের প্রধান সহযোগীই ছিল এসডিএফ।
কিন্তু তুরস্ক এসডিএফ এর কুর্দি সেনাদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে। তুরস্কের বক্তব্য, তারা সিরিয়ার ভেতরে অন্তত ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত কুর্দিদের হটিয়ে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ তৈরি করতে চায়।
তুরস্কের ভেতরে থাকা ৩০ লাখের বেশি সিরিয় শরণার্থীকে ঐ অঞ্চলে পুনর্বাসিত করার পরিকল্পনার কথাও বলেছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ।
এই চুক্তি কুর্দিদের জোট পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা রাখতে পারে – বিশেষ করে ঐ এলাকায় দীর্ঘসময় ধরে থাকা মার্কিন সেনাবাহিনীর সমর্থন হঠাৎ প্রত্যাহার হওয়ার পর।
এসডিএফ প্রধান মাজলুম আবদি ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের জন্য লেখা এক প্রতিবেদনে স্বীকার করেছেন যে, আসাদ সরকার ও তাদের রুশ মিত্রদের সাথে আপস করবেন তারা। তিনি লিখেছেন, আমরা তাদের প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করি না। সত্যি বলতে কাকে বিশ্বাস করবো তা ঠিক করা খুবই কঠিন। কিন্তু আমাদের আপস এবং আমাদের মানুষের গণহত্যা – দু’টির একটি বেছে নিতে হবে। তাই আমরা আমাদের মানুষের ব্যাপারেই চিন্তা করেছি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে হঠাৎই উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কিছু অঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার পরপর তুরস্ক সিরিয়ার সেসব অঞ্চলে দীর্ঘ পরিকল্পিত অভিযান শুরু করে।
রোববার প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন যে তার বাহিনী ১০৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে নিয়েছে, যার মধ্যে ২১টি গ্রাম রয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অন্যতম প্রধান সীমান্তবর্তী অঞ্চল রাস আল-আইন তুরস্কের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যদিও এসডিএফ বলেছে, তারা তুরস্কের সেনাদের শহরের বাইরে হটিয়ে দিয়েছে।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পর্যবেক্ষক গ্রুপ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, তুরস্ক ঐ এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
Leave a Reply