জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ অক্টোবর ১১, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 522 বার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্যবিদ্যালয়ে (বুয়েট) সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।এছাড়া আবরার হত্যার ঘটনায় এজাহারভুক্ত ১৯ শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে এই ঘোষণা দেন বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
উপাচার্য বলেন, বুয়েটে সকল রাজনৈতিক সংগঠন ও তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলো।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বৈঠক শুরু হয়। এর আগে বিকেল ৫টার দিকে বুয়েটের অডিটরিয়ামে উপস্থিত হন উপাচার্য।
বৈঠক শুরুর আগে আবরার ফাহাদ স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বিকেল থেকেই অডিটোরিয়ামে উপস্থিত হতে শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বেলা ৩টার পরই বুয়েটের বিভিন্ন হল ও ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীরা অডিটরিয়ামের সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন ভেতরে ঢোকার জন্য। দীর্ঘ লাইন থেকে বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে অডিটরিয়ামে প্রবেশ করেন তারা।
বৈঠকে বুয়েটের সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক সমিতির নেতারা উপস্থিত আছেন।
এর আগে সকালে পঞ্চমদিনের মতো অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা তখন সাংবাদিকদের জানান, দাবি আদায়ে তারা অনড় থাকবেন। উপাচার্যের কথা আশ্বস্ত না হলে সব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।
আন্দোলনের কারণে পাঁচদিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বুয়েটে। শিক্ষার্থী আবরার হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে শুক্রবার দুপুর ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত হয়ে জবাবদিহি করা ও দাবি মানার আহ্বান জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে এ আহ্বান জানিয়ে ওইদিন এই সময়ের মধ্যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে না এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
শিক্ষার্থীদের ওই ঘোষণার বৃহস্পতিবার রাতেই উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব কামরুল হাসান জানান, শুক্রবার বিকেল ৫টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন উপাচার্য। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি অনুসারে, সবার সঙ্গে নয়, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।
আবরার হত্যার বিচারসহ বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবির কথা আবারও তুলে ধরা হয়। শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- খুনিদের শনাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, খুনিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে আজীবন বহিষ্কার, আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বিশ্ববিদ্যালয়কে বহন, মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীন স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি, অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিশ প্রদান এবং বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, আবরারের মতো নিরীহ একজন ছাত্র নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর ভিসি যথাসময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি। ৩৮ ঘণ্টা পর তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাজির হন। কিন্তু কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। তাই শিক্ষার্থীদের কাছে হাজির হয়ে তাকে জবাবদিহি করতে হবে।
তারা জানান, আবাসিক হলগুলোতে র্যাগের নামে এবং ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার, নিরাপত্তার জন্য সব হলের উইংয়ের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা বসানো এবং হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে শেষেরটি এরই মধ্যে পূরণ হয়েছে। শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল খান গত বুধবারই পদত্যাগ করেছেন।
Leave a Reply