ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ভয়ঙ্কর এক টর্চার সেলে অভিযান চালিয়ে নির্যাতনের নানা উপকরণ জব্দ করেছে র‌্যাব।

অভিযানকালে টর্চার সেল থেকে বৈদ্যুতিক শক দেয়ার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, গায়ের চামড়া জ্বলে-জ্বালাপোড়া করে এমন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, বিপুল পরিমাণ লাঠি, হকিস্টিক পাওয়া গেছে বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: নির্যাতনের শিকার কয়েকজন ভুক্তভোগীর তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে টর্চার সেলটির সন্ধান পাওয়া যায়। ৬৪/৬৮ ইস্টার্ন কমলাপুর কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সেরর ৫ম তলার ৪০২ নম্বর রুমের ওই টর্চার সেল থেকে ইলেক্ট্রিক শক মেশিনসহ নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাবের গণমাধ্যম বিভাগ জানায়: খালেদের টর্চার সেল থেকে ২টি ইলেকট্রিক শক মেশিন, ৫টি লাঠি ও ২টি অস্ত্রের তেলের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া, ১৯০ পিস ইয়াবা, ৫ ক্যান বিয়ার, ৭০০ গ্রাম সীসা, ১.৫ কেজি সীসা খাওয়ার কয়লা, ৩টি মোবাইল, ২টি ল্যাপটপ ও নগদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার রাতে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের উল্টো দিকে ইস্টার্ন কমলাপুর টাওয়ারে খালেদের এই টর্চার সেলের সন্ধান পায় র‌্যাব-৩ এর একটি দল।

সেই অভিযানের নেতৃত্বে থাকা এক কর্মকর্তা গনমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন: কেউ চাঁদা দিতে না করলেই টর্চার সেলে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হতো। উচ্চ মাত্রায় সুদসহ পাওনা টাকা আদায়সহ সব ধরনের কাজে ব্যবহার করা হতো এই টর্চার সেল। টর্চার সেলে নির্যাতনের অনেক ধরনের যন্ত্রপাতি রয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন: খালেদের টর্চার সেলে যা দেখছি তাতে লোম শিউরে ওঠার মতো অবস্থা।

বৃহস্পতিবার রাতে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অস্ত্র মামলায় ৪ দিন এবং মাদকের মামলায় ৩ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।

রিমান্ড মঞ্জুরের পর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে কড়া পুলিশ প্রহরায় মিন্টোরোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশান থানা পুলিশের কাছে খালেদকে হস্তান্তর করে র‌্যাব। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে খালেদকে আদালতে পাঠায় র‌্যাব।

বুধবার সন্ধ্যায় গুলশানের বাসা থেকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদকসহ খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটক করে র‍্যাব। এ সময় তার বাড়ি থেকে তিনটি অস্ত্র, গুলি, ৫৮৫ পিস ইয়াবা, ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৫০ টাকা এবং ৬-৭ লাখ টাকা মূল্যের সমমান বিদেশী মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে। অস্ত্রগুলোর একটি লাইসেন্সবিহীন, অপর দু’টি লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ করে রাখা হয়েছিল।