অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 501 বার
বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর এলাকার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা কাতার প্রবাসী ব্যবসায়ী মো: ইউসুফ হাসানকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ইয়াবা দিয়ে মামলা দিয়েছে র্যাব।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছে ইউসুফ হাসানের স্ত্রী রুমি আক্তার।
তিনি বলেন, আমার স্বামী ইউসুফ হাসান দীর্ঘদিন যাবত কাতারে পোশাকের ব্যবসা করে আসছে। তিনি প্রতিমাসেই কাতারে ব্যবসায়িক কাজে যাওয়া-আসা করেন। তিনি এলাকার গরীব দু:খী মানুষসহ সর্বস্তরের মানুষের বিপদ আপদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। সেই সুবাধে তিনি মুন্সীগঞ্জের সবার কাছে একজন জনপ্রিয় লোক। গত তিন মাস আগে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন, এবং জেলার আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের অনুরোধে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী হন তিনি। ছোটবেলা থেকেই ছাত্রলীগ, পরে যুবলীগ এবং বর্তমানে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
‘তবে কখনোই কোন পদ পদবির লোভ করেননি এবং তিনি নিতেও চাননি। চলতি মাসের ৪ তারিখে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল এবং সেই সম্মেলনে আমার স্বামী ইউসুফ হাসানকে সভাপতি মনোনিত করার সকল কাজ চূড়ান্ত করেছিলেন উপজেলা এবং জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। সম্মেলন উপলক্ষে ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের সাবেক এবং বর্তমান নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আমার নিজ বাড়িতে একটি সভার আয়োজন করা হয়। এতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কল্পনা আক্তার এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি ফরহাদ খা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা ৭ টার সময় র্যাব-১১ এর একদল সাদা পোশাক পরিহিত অবস্থায় আমার বাসায় ঢুকে। তারা আমার বাসা থেকে আমার স্বামীকে ছাড়া বাকী সকলকে জোরপূর্বক বের করে দেয়।’ বললেন রুমি আক্তার।
তিনি বলেন, কোন কারণ ছাড়াই র্যাব আমার স্বামীকে হেনস্থা করে এবং তাকে বের করে নিয়ে যেতে চাইলে স্থানীয় জনগণ মানবপ্রাচীর তৈরি করে ব্যারিকেড দেয়। পরে র্যাব সদস্যরা তাদের নির্ধারিত পোশাক পরিধান করে এবং আমার স্বামীকে আমার বাড়ি সংলগ্ন নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। আমার এলাকার জনগণ সেখানেও র্যাবকে ঘেরাও দেয়। উপায়ান্তর না দেখে র্যাব এলাকার পুরুষ মহিলাসহ দু‘শতাধিক মানুষকে পিটিয়ে আহত করে। পরে ইউসুফ হাসানকে র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
তার মতে, এলাকার মানুষ সেখানে গিয়েও তার মুক্তির দাবিতে রাতভর বিক্ষোভ করে। পরে ৪ সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় তাকে হস্তান্তর করেন। পরে ইউসুফ হাসানের বিরুদ্ধে মাদক এবং ভাংচুরের মিথ্যা মামলা দায়ের করে র্যাব কর্মকতা মোঃ নবী হোসেন। এ মামলাগুলো সম্পূর্ণ উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী একজন প্রতিষ্ঠিত বস্ত্র ব্যবসায়ী। তিনি কখনো মাদক সেবন করেননি এবং তার জীবনের কোন পর্যায়েই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এমন কোন অভিযোগ কোথাও নেই এবং কোন থানাও কোন মামলা নেই।
ইউসুফ হাসানের স্ত্রী রুমি আক্তার সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, ঘটনার একদিন পরে আমরা জানলাম বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগে আসা কিছু লোক এবং আওয়ামীলীগের একটি অংশ র্যাবকে ম্যানেজ করে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এমনকি র্যাব এলাকায় খুনি পরিবার নামে খ্যাত এমন একজন আছান মাঝিকে স্বাক্ষী করেছে। এছাড়া পিন্টু মিয়া নামে অন্য একজনকে স্বাক্ষী করেছে যিনি জানেনই না তাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। আমার স্বামী একজন হার্টের রোগী। হার্টে ২টি রিং বসানো আছে। আমার নিরপরাধ স্বামীকে মুক্তি ও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ব মানবতার মা শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Leave a Reply