ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর গণভবনে প্রবেশের স্থায়ী পাস বাতিল করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, গণভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্থায়ী অনুমতি ছিল। ফলে এতদিন গণভবনে প্রবেশের জন্য অন্য অনেকের মতো তাদের আলাদা কোনো অস্থায়ী পাস বা প্রবেশ কার্ড নেয়া লাগতো না। যে কোনো সময় তারা গণভবনে প্রবেশ করতে পারতেন। খবর বাংলানিউজের।

এ সুবিধা বাতিলের ফলে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখন গণভবনে প্রবেশ করতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অন্যদের মতো আলাদা অস্থায়ী পাস নিতে হবে। আগের মতো সরাসরি গণভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না।
সাধারণত অল্প কিছু সময় বা কয়েক ঘণ্টার জন্য অস্থায়ী পাস দেয়া হয়।

এর আগে, শনিবার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং অযোগ্যতার কারণে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে জানা গেছে।

সেই সভায় তিনি শোভন-রাব্বানীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর ছড়িয়েছিল।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিবাহিত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, চাকরিজীবীসহ বির্তকিতদের পদ দেয়া, ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বঞ্চিত করা, কমিটি দিতে অর্থনৈতিক লেনদেনসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ও কানাঘুষা রয়েছে ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিজেই বিবাহিত এমন অভিযোগও রয়েছে।

সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে অযোগ্যতা, অদক্ষতার অভিযোগও রয়েছে দু’জনের বিরুদ্ধে।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেরিতে যাওয়া এমনকি আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাদের পরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি শোভনের গাড়িতে ওঠাকে কেন্দ্র করে মারামারিতে জড়ান ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। এসময় দায়িত্বরত এক সাংবাদিককে শোভনের গাড়িতে তুলে নেওয়া হয় এবং সাংবাদিকের মোবাইল ফোন থেকে ভিডিও ডিলিট করা হয়।

গত বছরের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সম্মেলনের আড়াই মাস পর গত বছরের ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছর মেয়াদী আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

এরপর দীর্ঘ প্রায় এক বছর পর গত ১৩ মে ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে বির্তকিত অনেককে পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ ঘোষণার পর পদ না পাওয়া ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের অনেকে আন্দোলন এমনকি অনশনেও বসেন।