স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির দায়ে সাতক্ষীরার ডেপুটি জেলার ডলি আক্তার ওরফে জলি মেহজাবিন খানকে কারা অধিদপ্তরে ক্লোজড করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রোববার সন্ধ্যায় কারা অধিদপ্তর থেকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে নির্দেশনা পত্র পাঠানো হয়। সাতক্ষীরা জেল সুপার আবু জায়েদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেল সুপার জানান, সাতক্ষীরার ডেপুটি জেলার ডলি আক্তার কারা অধিদপ্তরের একটি অনুষ্ঠান নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসের একটি কমেন্টের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি।

বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আসে। এ ঘটনায় রোববার রাতেই তাকে ক্লোজড করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর ডেপুটি জেলার ডলি আক্তারের ব্যবহৃত জলি মেহেজাবিন খান ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টকৃত ছবির মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিলাই (বিড়াল) লিখে কটূক্তি করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা ৪৯ মিনিটে তিনি তার ব্যবহৃত জলি মেহেজাবিন খান নামের ফেসবুকে সেই ছবিটি পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশনে এ কারা কর্মকর্তা লেখেন, ৫৬তম ব্যাচ কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান এমপি। এ অনুষ্ঠানের ধারাভাষ্যকার হিসেবে আপনাদের সঙ্গে আছি আমি…………। (লেখাটি পরিমার্জিত)
ছবিতে কমেন্ট করেন এ নারী কর্মকর্তার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী। এর মধ্যে শারমিন ববি নামের একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আফা মন্ত্রী বানান টা একটু ঠিক করে দেন, না হলে কিন্তু মাননীয় মন্ত্রী মাইন্ড খাইতে পারে।’ এ কমেন্টের প্রতিউত্তরে সাতক্ষীরার ডেপুটি জেলার ডলি আক্তার ওরফে জলি মেহেজাবিন খান লিখেছেন, ‘আমি চাটুকারিতা একদম পছন্দ করি না আফা (আপা), চাকরি করি জেলখানায়, এরকম বহু নামি-দামি ব্যান্ড (ব্র্যান্ড) ভেতরে আসলে বিলাই (বিড়াল) হয়ে যায়…যাই হোক, স্পেলিং মিসটেক হয়েছে এবং সেটা অনিচ্ছাকৃত।’ তার উত্তরে শারমিন ববি লিখেছেন, তোকেতো ভালো করেই চিনি, চাটুকারিতা যে করিস না সেটাও জানি, জাস্ট বানান ভুলটা চোখে পড়লো তাই তোকে জানালাম।’

সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে সেখানে মন্ত্রীকে নিয়ে এমন কটূক্তি কতটা যুক্তিযুক্ত হয়েছে সেই বিষয়ে পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ডেপুটি জেল সুপার ডলি আক্তার অরফে জলি মেহেজাবিন খানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ফেসবুক আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেখানে আমি কি লিখবো সেটা অন্য কাউকে তো বলবো না। আর কোন প্রসঙ্গে কার সঙ্গে বলেছি সেটাও আপনার জানতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি সরকারি কর্মকর্তা। সরকারের মন্ত্রীকে কটাক্ষ আমি করতেই পারি না। তখন তিনি ফেসবুকটি তার নয় বলে অস্বীকার করেন। তখন ফেসবুকে তার ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

ডেপুটি জেলারের এমন ফেসবুক মন্তব্যের বিষয়ে সাতক্ষীরা কারাগারের জেল সুপার আবু জায়েদ বলেন, সম্প্রতি সাতক্ষীরা কারাগারে যোগদান করেছেন ডলি আক্তার। কাশিমপুর কারাগারের অনুষ্ঠানে আমিও ছিলাম। তবে ফেসবুকে ডলি আক্তার কি লিখেছেন সেটি আমি দেখিনি। তাছাড়া আমাদের কারা আইনে রয়েছে সবকিছু ফেসবুকে দেয়া যাবে না।