দি সিটি ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরা সুলতানা পপি বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবির মামলা করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব কোর্ট অপারেশন এ কে এম আইয়ুব উল্যা বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, সিটি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইনের ব্যক্তিগত সহকারী মনিরা সুলতানা পপির বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা-বিরোধী বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ ওঠার পরে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পে-রোল ব্যাংকিং বিভাগে বদলী করা হয়। তবে বদলীর পর থেকে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অননুমোদিত ভাবে অনুপস্থিত ছিলেন পপি। ব্যাংকের নিয়ম ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে তিনবার রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে নোটিশ পাঠালেও তিনি কর্মস্থলে যোগদান না করায় এবং অননুমোদিত অনুপস্থিত থাকায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে অব্যাহতি পান।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকের তদন্তে প্রমাণিত হয় মনিরা সুলতানা পপি সিটি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সোহেল আর কে হুসেইন এর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে মোট ২৫০ দিন নিয়ম-বহির্ভূতভাবে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ব্যাংকের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন।
এছাড়াও সিটি ব্যাংকের একাধিক ড্রাইভারের লিখিত জবানবন্দিতে জানা যায়, এ সকল গাড়ি তিনি বিভিন্ন আপত্তিকর কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করেন। পরে গত ১৮ আগস্ট ব্যাংকের হেড অব এইচআর অপারেশন ও জিএডি বিভাগের কর্মকর্তাকে ডেকে নগদ ৫ কোটি টাকা ও বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা প্রদানের দাবি করেন মনিরা সুলতানা পপি। দাবিকৃত অর্থ ও সুযোগ-সুবিধা না দিলে এমডিকে চাকরি করতে দিবেন না এবং নানান ভাবে হয়রানি ও সম্মানহানি করার হুমকি দেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমানে প্রভিডেন্ট ফান্ড ঋণ, হাউজ বিল্ডিং ঋণ, ক্রেডিট কার্ড ও গাড়ির ঋণ, ব্যক্তিগত ঋণ খাতে মনিরা সুলতানা পপির কাছে তার চাকুরিরত থাকাকালে যাবতীয় প্রাপ্ত টাকা সমন্বয় করার পরও ব্যাংকের প্রায় ১ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এসব ঋণের টাকা পরিশোধ করার জন্য তাকে নোটিশও দেয়।
ব্যাংক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাদের পক্ষ থেকে পাঠানো নোটিশের উত্তর পপি দেননি, বরং তিনি পাল্টা সিটি ব্যাংক এবং ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনাম, সম্মানহানি করাসহ ব্যক্তিগত ক্ষোভ চরিতার্থ, অন্যায় ও অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছেন।
এরই অংশ হিসেবে সিটি ব্যাংকের এমডি মাশরুর আরেফিন, হেড অব সিএসআরএম আব্দুল ওয়াদুদ ও কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ কাফির বিরুদ্ধে গুলশান থানায় যৌন হয়রানির মামলা করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন মনিরা সুলতানা পপি, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে গুলশান মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স ম কাইয়ূম বলেন, ‘সিটি ব্যাংকের অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
সূত্র: ইত্তেফাক, আজকের পত্রিকা,নিরাপদ নিউজ