কুড়িগ্রামের উলিপুরে ছেলেধরা গুজব রটিয়ে আলাউদ্দিন (৫৬) নামে হতদরিদ্র দিনমজুর কাঠুরিয়াকে বেধড়ক পিটিয়েছেন আব্দুল মমিন নামে এক শিক্ষক । মারপিটের ঘটনায় উত্তেজিত জনতা ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাঠুরিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল মমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চৌমনী বাজার সংলগ্ন পল্লী উন্নয়ন রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

কাঠুরিয়া আলাউদ্দিন উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া ভবেশ উচাভিটা গ্রামের ফুক্তুল আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা, আলাউদ্দিন প্রতিদিনের ন্যায় গাছ কাটার কাজ করে ওই স্কুল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। স্কুলের সামনে আসলে ওই স্কুলের ২য় শ্রেণির এক ছাত্র আলাউদ্দিনকে পাগল বলে উত্যক্ত করতে থাকে।এক পর্যায়ে আলাউদ্দিন তাকে ধাওয়া করেন। এ সময় ওই স্কুলের শিক্ষক আব্দুল মমিন মিয়া ছেলেধরা গুজব রটিয়ে তাকে মারধর শুরু করেন।

এলাকাবাসীর সহায়তায় তিনি ছাড়া পেলেও শিশুটির পিতা আব্দুল মতিন আবারও তাকে রাস্তা থেকে জোর করে ধরে নিয়ে স্কুলের ভিতর শিক্ষক মমিনসহ বেধড়ক মারধর করেন। শিক্ষক মমিন ও মতিন আপন ভাই।

এক পর্যায়ে কাঠুরিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষক মমিন ও মতিন তাকে স্কুলের বারান্দায় ফেলে রাখেন। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ওই স্কুলের গেটে তালা লাগিয়ে আব্দুল মমিনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাঠুরিয়া আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে এবং শিক্ষক আব্দুল মমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

পরে আলাউদ্দিনের অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে শুক্রবার বিকেল গুজব রটানোর অভিযোগে দুই ভাই আব্দুল মমিন ও আব্দুল মতিনকে আসামি করে অজ্ঞাত ৫/৬ জন ব্যক্তির নামে মামলা দায়েরের পর শিক্ষক মমিনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলা দায়েরের পর আসামি জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।