‘রিভেঞ্জ পর্নো’ যা সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে যে কারো জীবনে৷ প্রতিশোধপরায়ন হয়ে কারো ব্যাক্তিগত বা যৌনতাপূর্ণ ছবি বা ভিডিও শেয়ার করাকে ‘রিভেঞ্জ পর্নো’ বলা হয়ে থাকে।প্রাক্তন সঙ্গীর ওপর প্রতিশোধ নিতে তার একান্ত অবস্থার ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করে দেওয়ার প্রবণতা বিশ্বের দেশে দেশে বাড়ছে। এই অপচর্চার নাম দেওয়া হয়েছে ‘রিভেঞ্জ পর্নো’।আমাদের দেশের জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী প্রভার এডাল্ট ভিডিও অনলাইনে,পর্নো সাইটে ছেড়ে দিয়েছিল তারই ছেলেবন্ধু। যার কারনে সংসার ভেঙ্গে যায় প্রভা’র। শুধু প্রভা’রই নয় ,প্রতিদিন কিছু বিকৃতমনস্ক মানুষ ভালবাসা,ভাললাগার ছলে মেয়ে,মহিলাদের সা্থে মেলামেশার ,অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ,ভিডিও ধারন করেছেন সঙ্গিনীর অজান্তে। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে সঙ্গিনী স্ব-ইচ্ছায় এই সব ভিডিওতে অংশ নিচ্ছেন । কিন্তু পরে ব্ল্যাক-মেইল এর শিকার হচ্ছেন। পান্না মাস্টার,পরিমল দাস’দের ব্যাপারে সবাই কম বেশী জানা স্বত্বেও প্রতিদিন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গুলো বাড়ছে এই সর্বনাশা ‘রিভেঞ্জ ভিডিও’শেয়ারিং। পরিনিতিতে বহু সংসার যেমন ভাঙ্গছে তেমন সামাজিক হেনস্তা,অপমানের স্বীকার হয়ে অনেকে আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছেন অনেকে। যে বা যারাই এই রিভেঞ্জ ভিডিও শেয়ার করেছেন অনলাইনে তারা হয়ত বুঝতেই পারছেন না এর ভবিষ্যৎ পরিণতি কি হতে পারে। ধরুন আপনি কোন মেয়ে অথবা মহিলার সাথে অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারন করে সুখ পেয়েছেন এবং পরবর্তীতে কোন কারনে প্রতিশোধপরায়ন হয়ে এই ভিডিও ছেড়েদিলেন অনলাইনে। আমাদের দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে আপনি শুধু ঐ মেয়ে অথবা মহিলার ক্ষতি করলেন না ,আপনি নিজেও নিজের সর্বনাশ ডেকে এনেছেন। আপনি আপনার ছেলে সন্ততি,বাবা -মা, ভাই বোন, সমাজের কাছে ,আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে নিজেকে অসন্মানিত করছেন।কারন এই ভিডিও মুহুর্তের মধ্যেই হাজার হাজার শেয়ারিং হচ্ছে,ডাউনলোড হয়ে হাতে হাতে ঘুরছে। আপনি ইচ্ছে করলেও এই ভিডিও আর মুছে দিতে পারবেন না। আপনার ছেলে মেয়ে ভবিষ্যতে যখন আপনার এই পর্নো ভিডিও দেখবে তখন আপনার সামাজিক অবস্থা কি হবে সেটা একবার ভাবুন।অনেক সময় আপনার অগোচরেই এই পর্নো ভিডিও, একান্ত ছবি গুলো বেহাত হয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট ফোন,ট্যাব ,ল্যাপটপ সহ গেজেট গুলো সার্ভিসিং এর সময় মেকানিক এর হাত ধরে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত মানুষ স্মার্টফোন,ট্যাব হারিয়ে ফেলছে, চুরি হচ্ছে ডিভাইস গুলো। এভাবেই বেহাত হচ্ছে আপনার একান্ত ভিডিও,ছবি গুলো।আর এই বেহাত এর হাত ধরেই প্রতিনিয়ত ব্ল্যাকমেইলিং এর স্বীকার হচ্ছে বহু মানুষ।
সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর সাবেক সেই সঙ্গীর আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা বা ‘রিভেঞ্জ পর্নোর’ প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। দেখা যায়, অতি আপন মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিতে নিজেদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ভিডিও আপলোড করছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গুলোতে।
রিভেঞ্জ পর্ণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একেবারেই ব্যক্তিগত, আর এ জাতীয় কনটেন্ট অনলাইনে থাকায় অনেকেই মানসিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। ক্ষেত্র বিশেষে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও । তাই এই সর্বনাশা রিভেঞ্জ ভিডিও’র কুফল সম্পর্কে এখনই গনসচেতনতা তৈরী করতে হবে।