দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গতকাল রবিবার সিরাজগঞ্জ, মাগুরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, নওগাঁ, সুনামগঞ্জ, গাজীপুর ও রাঙামাটিতে এসব বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জে বাবা-ছেলে সহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

মাগুরা সদরের অক্কুর পাড়া, রায় গ্রাম এবং শালিখা উপজেলার বুনাগাতী ও বাকলবাড়িয়া গ্রামে বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন অক্কুর পাড়ার ভ্যানচালক শামীম, রায় গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আলম, জয়পুরহাটের মনপুরা এলাকার আলম মিয়ার ছেলে মেহেদী এবং বাকলবাড়িয়া গ্রামের শক্তিপদ বিশ্বাসের ছেলে প্রল্লাদ বিশ্বাস।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। সেই সঙ্গে থেমে থেকে বজ্রপাত হতে থাকে। বজ্রপাতে মাঠে কাজ করার সময় মাগুরা সদর উপজেলার আমুড়িয়া গ্রামের আলম মোল্লা, শালিখা উপজেলার বুনাগাতি ইউনিয়নের বাকলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক প্রল্লাদ বিশ্বাসের মৃত্যু হয়। অপর দিকে সদর উপজেলার আক্কুরপাড়া এলাকায় মাগুরা-শ্রীপুর সড়কে বজ্রপাতে ভ্যানচালক শামীম সরদারের মৃত্যু হয়। শালিখা উপজেলার সীমাখালিতে বজ্রপাতের প্রচণ্ড শব্দে মুঠোফোন টাওয়ার থেকে নিচে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলে মেহেদী হাসানের মৃত্যু হয়।
নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা উপজেলায় এক গৃহবধূ ও এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সাপাহারে সোনাভানের স্বামীসহ আরও তিনজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন সাপাহারের শিমুলডাঙ্গা রামাশ্রম গ্রামের সোনাভান (২২) এবং পোরশার বা‌লিয়াচান্দা গ্রা‌মের মুক্তার হোসেন (১৪)।
নোয়াখালীতে মাঠে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে ইকবাল হাসনাত ওরফে পিয়াল (১৩) নামের এক স্কুলছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পিয়াল নোয়াখালী জিলা স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
পিয়ালের চাচা আবদুল্লা আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, সকালে পিয়াল বাড়ির পাশে মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কালবৈশাখী ও বৃষ্টি শুরু হলে বন্ধুরা সবাই দ্রুত মাঠ থেকে বাড়ির দিকে দৌড় দেয়। এ সময় বিকট শব্দে একটি বজ্রপাত পিয়ালের ওপর পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, নিহত পিয়ালের বাবার নাম সোহেল রানা ওরফে জগলু। তিনি নোয়াখালী সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কাজ করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে পিয়াল বড়। আজ বুদ্ধপূর্ণিমায় স্কুল ছুটি থাকায় বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির পাশের মাঠে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিল সে।ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন দত্ত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

সুনামগঞ্জ সদরের সুরমা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে নিহত হয়েছেন ললিত মিয়া (৩০) নামের এক কৃষক। রোববার বেলা সাড়ে ১০টায় বাড়ির পাশে বোরো ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। সদর থানার ওসি মো. শহিদুল্লাহ জানান, বজ্রপাতের পর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় বজ্রপাতে নিহত হন গৃহবধূ মানছুরা বেগম (৩৫)। তিনি উপজেলার মুসলিম ব্লক এলাকার বাসিন্দা বলে বাঘাইছড়ি থানার ওসি আমির হোসেন জানান। তিনি বলেন, ঘরের বাইরে কাজ করার সময় দুপুর ১টার দিকে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বজ্রপাতে আব্দুর রহিম (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দুইজন।
রোববার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত রহিমের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়। আহতদের নাম জানা যায়নি।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটায় বজ্রপাতে এক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত চারজন।
নিহত জাফিরুল ইসলাম গাইবান্ধার গোবিন্ধগঞ্জ উপজেলার হরিনাথপুর এলাকার আব্বাস আলীর ছেলে।