অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা বিধানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মহানগরীর ৬৩ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

আজ শনিবার ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ ২০১৯’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যের সময় তিনি এই তথ্য জানান।
মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, অপরাধ প্রতিরোধ, প্রতিকার ও জননিরাপত্তা বিধানে চলতি বছরের ১৩ জুন পর্যন্ত সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিআইএমএস) সফটওয়্যারে ডিএমপি’র ৫০টি থানার ৩০২টি বিট থেকে একযোগে ২২ লাখ পরিবারের প্রায় ৬৩ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ ২০১৬ সাল থেকে অফিশিয়ালি নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করছে। আজ ১৫ জুন থেকে শুরু হয়েছে নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ। চলবে ২১ জুন পর্যন্ত।
তিনি বলেন, রাজধানীর ৫০টি থানার ৩০২টি বিট থেকে একযোগে সংগৃহীত হবে নাগরিক তথ্য সংগ্রহ ও হালনাগাদ কার্যক্রম। এসময় তিনি নাগরিক তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে পুলিশকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সিআইএমএস-এর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহে পুলিশ বিভিন্ন বাড়ি ও স্থাপনা নিয়মিত পরিদর্শন করে। ফলে জঙ্গি ও সংঘবদ্ধ অপরাধীদের পক্ষে মহানগর এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে অপরাধ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। এই কারণে জঙ্গি কার্যক্রম ঢাকা মহানগরী এলাকায় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, সিআইএমএস সফটওয়্যারে সংগৃহীত তথ্যের ব্যবহারের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ও ক্লু-লেস অনেক অপরাধ উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতার সম্ভব হয়েছে। এছাড়া সিআইএমএস-এর তথ্য সংগ্রহকালে নাগরিকদের সঙ্গে পুলিশের মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে, ফলে বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং ক্রাইম ট্রেন্ড, জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনগণকে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতন করা সম্ভব হয়েছে।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ২১ জুন থেকে পরবর্তী সাত দিন ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স থেকে গঠিত সার্ভিল্যান্স টিম ‘র‌্যানডম সিলেকশনে’র (দৈবচয়ন) মাধ্যমে বিভিন্ন বাসায় যাচাই করে দেখবে তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে কিনা। এ সময় কেউ বাদ গেলে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে সিআইএমএস সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যাতে কেউ বাদ না যায়। আমরা চাই ঢাকা শহরে বসবাসরত প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য সিআইএমএস সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্ত করতে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। সিআইএমএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করার ফলে আমাদের এই সাফল্য এসেছে। গুলশানে হোলি আর্টিজানে হামলার পর থেকে ঢাকা শহরে নাগরিকের সঠিক তথ্য দেওয়া ছাড়া কেউ বাসা ভাড়া নিতে পারে না।
সম্প্রতি অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বিষয়গুলো দেখে থাকে। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও এ ব্যাপারে কাজ করছে। তবে আমরাও এ ধরনের অবৈধ বিদেশি আছে কি না তা খেয়াল করি। ইতোমধ্যে অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের কিছু অপরাধচক্রের সদস্যকে আমরা গ্রেফতার করেছি। সরকারের উচ্চপর্যায়ের মহলও এ বিষয়ে সতর্ক। বাসস।