উচ্চতার তুলনায় ওজন খুব বেশি না হলেও পেটে চর্বি জমে ঝুলে পড়লে হৃদরোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার মায়ো ক্লিনিকের গবেষণায় এ রকম তথ্যই পাওয়া গেছে।

গবেষণার প্রধান হোসে মেদিনা-ইনোহসা বলেন, ওজন স্বাভাবিক হওয়ার পরও পেটে চর্বিওয়ালা একজন মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যার পেটে চর্বি নেই, তার তুলনায় বেশি। এমনকি পেটে চর্বি নেই এমন মানুষটি যদি ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’ অনুযায়ী ওবেসিটির শিকারও হয়, তবুও তার তুলনায় একজন পেটের চর্বিওয়ালা মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। এ ধরনের শারীরিক কাঠামো অলস জীবনযাত্রা, পেশির ঘনত্ব কম এবং অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার লক্ষণ।

বডি ম্যাস ইনডেক্স বা বিএমআই হলো একজন মানুষের উচ্চতা অনুযায়ী তার ওজন কম বা বেশি, নাকি স্বাভাবিক- তা মাপার মানদণ্ড। তবে তা দিয়ে শরীরে চর্বি ও পেশির পরিমাণ মাপা যায় না। শরীরের মাঝখানে স্থূলতার মানে হলো সেখানেই বাড়তি চর্বি জমা হচ্ছে, যা চর্বির অস্বাভাবিক বণ্টনের ইঙ্গিত দেয়। শরীরের মাঝখানে যাদের চর্বি বেশি, তাদের হৃদরোগের আশঙ্কা বেশি- এ ধারণার যৌক্তিকতা নিয়ে কাজ করে এই গবেষণা। এ জন্য ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ বছর কিংবা তারও বেশি বয়সের প্রায় এক হাজার ৭০০ নাগরিককে বাছাই করেন গবেষকরা।

প্রত্যেকের বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করা হয়; মাপা হয় ওজন, উচ্চতা, কোমর ও নিতম্বের বেড়। এরপর ২০০০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এদের কারও হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা হৃদরোগে কারও মৃত্যু হয়েছে কি-না সেদিকে নজর রাখা হয়। দেখা যায়, স্বাভাবিক বিএমআই এবং শরীরের মাঝখানে স্থূলতা আছে যাদের, তাদের দীর্ঘমেয়াদি হৃদরোগের আশঙ্কা ?দ্বিগুণ।

মেদিনা-ইনোহসা বলেন, পেটের চর্বি যদি নিতম্বের চর্বির তুলনায় বেশি হয়, তাহলে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন এবং শরীরে চর্বি বণ্টনের ভারসাম্য পরীক্ষা করান। ভুঁড়িওয়ালাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত কোমরের বেড় কমানো, ওজন কমানো নয়। তাই ব্যায়াম করতে হবে, অলস সময় কাটানো চলবে না এবং প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। সূত্র :আইএএনএস।