জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ মার্চ ২৪, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 463 বার
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, আদালতকে ভুল বুঝিয়ে ও প্রতারণার মাধ্যমে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নারীকে মারধর ও ধর্ষণ মামলার আসামি রুহুল আমিনের জামিনের ব্যবস্থা করেছিলেন তাঁর আইনজীবী।রুহুল আমিনের জামিন নজিরবিহীন ঘটনা। যেখানে পুরো জাতি ধর্ষণ মামলার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ, সেখানে জামিন হওয়ায় সবাই হতবাক।
আজ শনিবার দুপুরে আদালত রুহুল আমিনের জামিন বাতিল করার পর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান মাহবুবে আলম। মামলার আসামি রুহুলের জামিন বাতিল করায় আদালতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আসামি রুহুল আমিনের আইনজীবী প্রতারণার মাধ্যমে তাঁর জামিনের ব্যবস্থা করেছিলেন।
আমি আগামী ২৫ মার্চ আদালতের কাছে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারির আর্জি জানাব। বিষয়টি প্রথমে প্রধান বিচারপতির নজরে আনব। পরে প্রয়োজনে বার কাউন্সিলের নজরে আনা হবে।’
কীভাবে আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে জানাতে গিয়ে মাহবুবে আলম বলেন, ‘সুবর্ণচরের আলোচিত গণধর্ষণ মামলার আসামি মো. রুহুল আমিনের জামিনের জন্য তাঁর একজন আইনজীবী হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁর নাম আশেক-ই রসুল।
তিনি আমাদের অফিসকে (অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়) জানিয়েছিলেন, তাঁর আবেদনটি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের বেঞ্চে শুনানি হবে। কিন্তু তিনি আবেদনটি বিচারপতি মামনুন রহমানের বেঞ্চে শুনানি করেন এবং এই মামলার স্বীকারোক্তিমূলক জবানববন্দি ও ভিকটিমের জবানবন্দি সন্নিবেশিত না করে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে জামিন নেন।’
‘পরে আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট কোর্টের বিচারপতিদের বিষয়টি অবহিত করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকালে তাঁরা চেম্বারে বসে এই জামিন আদেশটি রিকল করে বাতিল করেন। এর ফলে ওই আসামিকে দেওয়া পূর্বের জামিন আদেশটি বাতিল হয়ে গেল। অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আর কার্যকর থাকল না। এখন আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেব, আসামি যাতে জেল থেকে বের হতে না পারে’, বলেন মাহবুবে আলম।
ওই আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করে অ্যাটর্নি জেনারেল আরো বলেন, ‘এটা খুবই ঘৃণ্য তৎপরতা। আমরা বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনব যে, কিছু কিছু আইনজীবী এক আদালতের কথা উল্লেখ করে অন্য আদালতে শুনানি করেন। আর বিচারপতিদের কাছেও আমাদের আবেদন, তাঁরা যখন মামলার পিটিশন দেখেন, তারা যেন লক্ষ রাখেন, আইনজীবী কোন আদালতে কয় নম্বর কোর্টের আবেদন করে কোন কোর্টে শুনানি করতে এসেছেন।’
‘(এ মামলার ক্ষেত্রে) যদি আদালতের সামনে সব তথ্য-প্রমাণ সন্নিবেশিত হতো, তবে অবশ্যই আদালত (আসামিকে) জামিন দিতেন না। আদালতকে ভুল বুঝিয়ে জামিন নেওয়া হয়েছিল, সেটা বুঝতে পেরেই আদেশটি রিকল করে জামিন বাতিল করেছেন আদালত’, বলেন মাহবুবে আলম।
রুহুল আমীনকে জামিন দেওয়ার বিষয়টিকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘যেখানে সমগ্র জাতি ধর্ষণ মামলার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং ভয়ঙ্কর ক্ষুব্ধ, সেখানে জামিন হয়ে যাওয়ায় সবাই হতবাক হয়ে গিয়েছেন। তবে জামিন বাতিল হওয়ায় আদালতের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’
Leave a Reply