রাজধানীর সদরঘাটে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবির ঘটনায় শনিবার মোট চারজনের লাশ উদ্ধার করেছে ডুবুরিরা। গত বৃহস্পতিবার রাতের এ ঘটনায় এর আগে শুক্রবার এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। বাকি একজনের খোঁজে শনিবার তৃতীয় দিনের মতো নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ পুলিশ।

সদরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই নৌ দুর্ঘটনায় আহত পোশাক শ্রমিক শাহজালাল মিয়ার বোন জামশেদার (২১) লাশ শুক্রবার উদ্ধার করা হয়। এরপর শনিবার সকালে শাহজালালের মেয়ে মাহিরের (৬) এবং দুপুরে জামশেদার স্বামী দেলোয়ার (৩০), তাদের ছয় মাসের ছেলে জুনায়েদ ও মাহিরের বোন মিমের (৮) লাশ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, মিম ও মাহিরের মা সাহিদা বেগম (৩০) এখনও নিখোঁজ রয়েছে। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে এ ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে শুক্রবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিআইডব্লিউটিএ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নৌকায় করে সদরঘাটের দিকে আসছিলেন গার্মেন্ট কর্মী শাহজালাল মিয়া (৩৮)। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শরীয়তপুরে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। রাত ১০টার দিকে সদরঘাটের ১৩ নম্বর পন্টুনের কাছে সুরভি-৭ লঞ্চের ধাক্কায় তাদের নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চের প্রপেলারের আঘাতে শাহজালালের দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নৌ পুলিশের টহলদল তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। বর্তমানে তিনি জাতীয় অর্থোপেডিকস ও পুর্নবাসন (পঙ্গু হাসপাতাল) কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। তার পরিবারের চারজন সদস্য এখনও নিখোঁজ।

বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নৌবন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ওই নৌকার যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত লঞ্চের পেছন দিক দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় লঞ্চ পেছন দিকে যেতে থাকায় প্রপেলারের ঢেউয়ের ধাক্কায় নৌকাটি ডুবে যায়। নৌকাটিতে আট আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে কেবল মাঝি সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন।