বাংলাদেশে ভারতের টাটা গ্রুপের নতুন বিনিয়োগ চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারও ব্যবসাবান্ধব। টাটা সাড়ে চার দশক ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। আশা করা যায়, টাটা তাদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার অংশীদার হবে।

মঙ্গলবার বাংলাদেশের বাজারে টাটার এলপিটি-১২১২ ট্রাকের বাজারজাত শুরু উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশে টাটার ব্যবসায়ী অংশীদার নিটল নিলয় গ্রুপ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনের পরে গাড়িটির বাজারজাত কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

টিপু মুনশি বলেন, রাস্তায় তিনটি গাড়ির মধ্যে দুটিই টাটার। এর অর্থ, বাংলাদেশে টাটা ভালো ব্যবসা করছে। টাটার প্রতি অনুরোধ থাকবে, এদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর, যাতে কর্মসংস্থান হয়। সরকার চায়, রফতানি আয় বাড়াতে। টাটা বাংলাদেশ থেকেই রফতানি করতে পারে। এতে উভয়ই উপকৃত হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রীর এ প্রস্তাবের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত টাটা মোটরসের বাণিজ্যিক গাড়ি বিভাগের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আসিফ শামীম বলেন, নিটল নিলয় গ্রুপের সঙ্গে টাটা যৌথ বিনিয়োগে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। এখানকার বাজারের চাহিদা ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী উদ্যোগ নেওয়া হবে। নিটল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ইতিমধ্যে টাটার পিক-আপ প্লান্ট নির্মিত হয়েছে। প্রাইভেট কারও এখানে তৈরি হবে। কিছু প্রণোদনা দিলে সরকারের এই মেয়াদেই ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ গাড়ি উৎপাদন সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে মাতলুব আহমাদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘হালকা প্রকৌশল সেল’ ১৫ বছর ধরে কাজ করছে। কিন্তু এখনও কোনো স্পেয়ার পার্টস বানানো সম্ভব হয়নি। স্পেয়ার পার্টস উৎপাদনে না গেলে ইঞ্জিনও বানানো যাবে না। তিনি এজন্য নীতিসহায়তা দাবি করেন। একইসঙ্গে ইলেকট্রিক ভেহিক্যালের (বৈদ্যুতিক গাড়ি) নিবন্ধনের অনুমোদন চান। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইলেকট্রিক গাড়ি চলছে। রাতভর গাড়ি চার্জ হয়, দিনভর চলে। বাংলাদেশে এক্ষেত্রে এখনও কোনো উদ্যোগ নেই। এজন্য নীতিমালা করা দরকার। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চায়। ফলে এক্ষেত্রেও পিছিয়ে থাকবে না। সরকার নিশ্চয় সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।

নিটল নিলয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মোশাব্বের আহমদ নতুন এই ট্রাকের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এটি মাঝারি ধরনের বাণিজ্যিক গাড়ি। ৩৭৮৩ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিনের এ গাড়ি ১৫ টন ভার বহনে সক্ষম। জ্বালানি সাশ্রয়ী এ গাড়ি বাংলাদেশের রাস্তার ধরনের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজাইন করা হয়েছে। এতে অতিরিক্ত ভারবহনের সুযোগ নেই। ফলে রাস্তা নষ্ট হবে কম।

অনুষ্ঠানে টাটার কান্ট্রি ম্যানেজার জিতেন্দ্র বাহাদুরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।